স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :;
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের মাইজ পাড়া থেকে নিখোঁজ হওয়া প্রবাসী ইউনুছকে সাতকানিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দ্রত সময়ে উদ্ধার করছে বলে জানা যায়।
১৮ মে রবিবার আনুমানিক বেলা দেড়টার দিকে মোহাম্মদ ইউনুছ নিখোঁজ হন।
এব্যাপারে নিখোঁজ হওয়া ইউনুছের স্ত্রী সাতকানিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করিলে অভিযোগের আলোকে সাতকানিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৮ মে রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করেন।
নিখোঁজ হওয়া মোহাম্মদ ইউনুছ হচ্ছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিলাইশ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ হিলিমিলি এলাকার আজগর আলী মিয়াজি বাড়ির আলি আহমদের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,
অভিযোগের বাদী নাসিমা আকতার (৪৪) বলেন আমার স্বামী একজন প্রবাসী। বিগত ২০২৪সালের নভেম্বর মাসে
আমার স্বামী মোহাম্মদ ইউনুস প্রবাস হইতে একেবারে দেশে চলিয়া আসে। এর সুবাদে সাতকানিয়া উপজেলার ০৮নং ঢেমশা ইউনিয়নের উত্তর ঢেমশা মাইজ পাড়া এলাকায় ইতিপূর্বে একটি সেমি পাঁকা ঘর
নির্মাণ করে। উক্ত সেমি পাঁকা ঘরটি দেখাশোনা করার জন্য প্রায় সময় আমার স্বামী উত্তর ঢেমশা, মাইজ পাড়া এলাকায় যাতায়াত করিত। এমতাবস্থায় ১৮ মে সকাল অনুমান ১০.৩০
ঘটিকার সময় আমার স্বামী মোহাম্মদ ইউনুস উত্তর ঢেমশা, মাইজ পাড়া এলাকায় সেমিপাকা বসত ঘরটি দেখার জন্য যায়। একই দিন ১৮ মে রবিবার দুপুর অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় আমার স্বামী বাড়ীতে আসার জন্য বাহির হইয়া তাহার সেমিপাকা বসত বিল্ডিং এর সামনে রাস্তার উপর পৌছামাত্র বিবাদীগণ আমার স্বামীর গতিরোধ করিয়া তাহার সহিত অহেতুক ঝগড়া বিবাদ করিতে থাকে। আমার স্বামী উক্ত বিবাদীদেরকে ঝগড়া বিবাদ করিতে নিষেধ করিলে বিবাদীগণ ক্ষিপ্ত হইয়া আমার স্বামীকে চড় থাপ্পড় মারিতে থাকে।
একপর্যায়ে বিবাদীগণ আমার স্বামীকে টানা হেচড়া করিয়া উত্তর
ঢেমশা, মাইজ পাড়া এলাকার বিলের মধ্য দিয়া অজ্ঞাতস্থানে নিয়া যায়। পরবর্তীতে গতকাল
১৮ মে রবিবার দুপুর অনুমান ০২.০৪ ঘটিকার সময় আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার
০১৬১৮-৮২৫২১৯ হইতে আমার মেয়ে তাসমিয়া তাহসিন তামান্না (২৫) এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার 01975-35616৪ তে ফোন আসে। আমার মেয়ে ফোন রিসিভ করার পর বিবাদী আমার মেয়েকে জানায় যে, তাহারা আমার স্বামী মোহাম্মদ ইউনুসকে অপহরণ করিয়া নিয়া অজ্ঞাতস্থানে আটক করিয়া রাখিয়াছে। যদি আমরা আমার স্বামীকে জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় ফেরত পেতে চাই তবে আমাদের এলাকার এনু মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে গিয়া বিবাদী নগদ ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দিতে হইবে। যদি আমরা টাকা না দেই কিংবা আইনের আশ্রয় নেই তবে আমার স্বামীকে মারধর সহ প্রাণে হত্যা করিবে, আমার স্বামীর অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ধারণ করিয়া সেগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াইয়া দিয়া আমার স্বামী ও আমাদের পরিবারের সম্মানহানী করিবে। বিষয়টি আমার মেয়ে আমাকে জানাইলে তাৎক্ষনিক আমি, আমার ছেলে যায়েদ মাহমুদ তৌকির (১৭)সহ সাতকানিয়া থানাধীন মাইজ পাড়া এলাকায় আসিয়া স্থানীয় লোকদেরকে আমার স্বামীকে অপহরণ করার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে স্থানীয় লোকজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করিয়া জানায় যে, বিবাদীগণ বিবাদীগণ আমার স্বামীকে অপহরণ করিয়া নিয়া
গিয়াছে। বিবাদীগণ সংখ্যায় অনেক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন অপহরণ করার সময় কোন ধরনের বাধা প্রদান করিতে পারে নাই। তখন আমি, আমার ছেলে সহ আমার আত্মীয় স্বজনেরা বিভিন্নস্থানে আমার স্বামীকে অনেক খোঁজা-খুঁজি করিতে থাকি কিন্তু কোথাও আমার স্বামীর কোন সন্ধান পাওয়া যায় নাই।
এরই মধ্যে গতকাল ১৮ মে রবিবার বিকাল অনুমান ০৩.১০ ঘটিকার সময় পূনরায় আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৬১৮-৮২৫২১৯ থেকে আমার ছেলে যায়েদ মাহমুদ তৌকির (১৭) এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৬০৩-৬৯৩৩৯৮ তে ফোন আসে। তখন অজ্ঞাতনামা একজন বিবাদী পূনরায় আমার স্বামীকে অপহরণ করার বিষয়টি অবহিত করিয়া আমাদের নিকট ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দাবী করে এবং উক্ত টাকা না দিলে আমার স্বামীকে প্রাণে হত্যা করিবে মর্মে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। এরপর থেকে অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণ একাধিকবার আমার মেয়ে ও আমার ছেলের মোবাইল নাম্বারে ফোন করিয়া টাকা দাবী করিতে থাকে।
সর্বশেষ গতকাল ১৮ মে সন্ধ্যা অনুমান
০৭.১৩ ঘটিকার সময় আমার স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার 01618-8252১৯ হইতে আমার ছেলে যায়েদ মাহমুদ তৌকির (১৭) এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৬০৩-৬৯৩৩৯৮ তে ফোন করিয়া অজ্ঞাতনামা বিবাদী আমার ছেলেকে জানায় যে, যেমন করেই হোক বিবাদীদেরকে কমপক্ষে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা উপরোক্ত ৪নং বিবাদীর মাধ্যমে প্রদান করিতে হইবে, অন্যথায় বিবাদীগণ আমার স্বামীর অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ধারণ করিবে এবং উক্ত ভিডিও ও ছবি সমূহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়াইয়া দিয়া আমাদের পরিবারের সম্মানহানী করিবে। পরবর্তীতে বিবাদীগণ আমার স্বামীকে প্রাণে হত্যা করিয়া আমার স্বামীর লাশ গুম করিয়া ফেলিবে। বিবাদীগণ যেকোন সময় আমার স্বামীর বড় ধরনের ক্ষতি সাধণ করিতে পারে।
উক্ত ঘটনার বিষয়টি আমি আমার আত্মীয় স্বজনদের অবহিত করিয়া আমার স্বামীকে বিভিন্নস্থানে খোঁজা-খুঁজি
করার কাজে ব্যস্ত থাকায় অভিযোগ দায়ের করিলে সাতকানিয়া থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করিয়া ১৮ মে রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উদ্ধার করে।
এব্যাপারে সাতকানিয়া থানার এস আই ইদ্রিস ও এএস আই মোস্তাক অভিযান চালিয়ে উদ্ধারের বিষয়টি স্বীকার করেন।
Leave a Reply