মাইনুল ইসলাম রাজু
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগের লকডাউনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আমতলীতে সড়কে দাড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দৃবৃত্তরা। বাসটি পুরে ছাই হওয়ায় প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে। বাসটি পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মরহুম রুস্তুুম আলী গাজী বাড়ির সামনে পার্কিং করা ছিল।
আমতলী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মরহুম রুস্তুম আলী গাজী বাড়ির সামেনে স্বর্না পরিবহন নামের (নম্বর (পটুয়াখালী ব-১১-০০৪৬) একটি বাসে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষনিক ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় বাসটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ততক্ষনে বাসটির সম্পূর্ন পুরে ছাই হয়ে গেছে।
আমতলী উপজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. নিজাম প্যাদা বলেন, বিগত কয়েক বছল ধরে আমরা বাসগুলো গাজী বাড়ির সামনের সড়কে পার্কি কওে রাখি কখনো কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। একই সমিতির সাধারন সম্পাদক ওহিদুজ্জামান সজল বলেন, বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলকারী স্থানীয় বাসগুলো সারাদিন চলাচল শেষে রাতে পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের মরহুম রুস্তুুম আলী গাজী বাড়ির সামনে সড়কের উপর পার্কিং করে রাখা হয়। সেখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা এবং প্রয়োজনীয় মেরামতের কাজও সারা হয়। পরের দিন আবার যে যার ট্রিপ অনুয়ায়ী চলে যায়। বৃহস্পতিার রাতের বাস পোরানোর ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। তিনি এঘটনার সাথে জড়িতদের বিচার দাবী করেন।
বাসের হেলপার মো. রাব্বি বলেন, আমি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলাম। আগুনোর শব্দ পেয়ে কোন রকম জীব বাঁচিয়ে নীচে নেমে দেখি বাসের সব দিকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। থারা ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিবায়। যে ভাবে বাসটি পোরানো হয়েছে তাতে সারানোর মত আর কোন কায়দা নেই।
বাস মালিক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, সারাদিন বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচল করার পর সন্ধ্যায় বাসটি আমতলী পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের রুস্তুম আলী গাজী বাড়ির সামনে সড়কে পার্কিং করা ছিল। রাত আনুমানিক সোয়া ১২ টার সময় হেলপারের নিকট থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখি অগ্নিকান্ডে আমার বাসটির ভিতওে সিট, মেসিনের যাবতীয় যন্ত্রাংশ, দরজা জানালা সব পুরে ছাই হয়ে গেছে। এখন শুধু কঙ্কালের মত লোহার খাচাটি দাড়িয়ে আছে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আমার সকল সম্বল শেষ করে বাসটি কিনেছি। বাসের আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। ছেলে মেয়েদের লেখা পরা করাই। বাসটি পুরে ছাই হয়ে যাওয়ায় আমি এখন পথের ফকির হয়ে গেছি। সারানোর মত টাকাও আমার হাতে নেই। এখন আমি কি করবো কোন কিছু ভেবে পাচ্ছি না।
অগ্নিকান্ডের পরপরই আমতলী থানা পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা কর্মীকে আটক করেছে। আটককৃতরা হল উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মো. আতাউর রহমান (২৯), উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. পারভেজ খান (২৮), পৌর যুবলীগ নেতা মো. তস্ময় গাজী (৩৩), সাবেক পৌর ছাত্রলীগ নেতা মো. কাওছার আহম্মেদ রনি (৩৩), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. ছগির মল্লিক (২৩)।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, এঘটনায় পাঁচ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply