নাজমুল হাসান:
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক অরাজকতা ও সহিংস ঘটনার পেছনে ভারতে অবস্থানরত পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত রয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সূত্রে। অভিযোগে বলা হচ্ছে, তার উস্কানিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা আত্মগোপনে থেকে নাশকতার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি পূর্বের আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতাদের অনেকে এখন বিএনপি, জামাত ও এনসিপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে অস্থিরতা ছড়ানোর প্রচেষ্টায় যুক্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্রে জানা যায়,রাজধানীর সূত্রাপুর, গুলিস্তান, মগবাজার ও মিরপুরসহ একাধিক এলাকায় গত এক সপ্তাহে বাসে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ৮–১০ জনের দল ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা—এই সব কর্মকাণ্ডে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের গোপন নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির নির্দেশ দিচ্ছেন বলে গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহ। যদিও স্বাধীনভাবে এই দাবি যাচাই করা যায়নি।
একাধিক গোপন সূত্রের দাবি, আওয়ামী লীগের পূর্বের কিছু অর্থ যোগানদাতা, যারা দলটির ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা করতেন, তারা বর্তমানে বিএনপি, জামাত ও এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এই আর্থিক গোষ্ঠী এখন গোপনে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলাকে উস্কে দিতে ভূমিকা রাখছে—যা প্রশাসনের নজর এড়াতে ধীরে ধীরে সংগঠিত হচ্ছে।
মুঠোফোনে বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন,
পূর্বের কিছু ব্যবসায়ী যারা আওয়ামী লীগকে সহায়তা করতেন, তারাই এখন জামাত বা এনসিপির ছায়ায় নিজেদের রক্ষা করছে। এদের আর্থিক সহায়তা বন্ধ করতে পারলেই নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হবে।”
পুলিশ প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের বলেন,
যারা নিষিদ্ধ সংগঠনের নামে অরাজকতা করছে, তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। গণমাধ্যম এসব ব্যক্তিদের তুলে ধরলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারব।”
তিনি আরও যোগ করেন, পুলিশের কাছে ইতিমধ্যে সূত্রাপুর ও গুলিস্তানের অগ্নিসংযোগের ঘটনার সুনির্দিষ্ট ভিডিওপ্রমাণ এসেছে, যা বিশ্লেষণাধীন।
সামাজিক মাধ্যমে গুজব ও সতর্কতা:
সোশ্যাল মিডিয়ায় “ভারত থেকে শেখ হাসিনার নির্দেশে আন্দোলন” শিরোনামে নানা ভিডিও ও পোস্ট ভাইরাল হলেও অধিকাংশের উৎস অজানা। ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এসব তথ্য যাচাই না করে প্রচার না করা।
সম্পাদকীয় মন্তব্য (তথ্য যাচাই-সংক্রান্ত নোট)
এই প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যগুলো দাবি ও অভিযোগ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে; এ সংক্রান্ত কোনো সরকারি তদন্ত প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বা সংগঠন চাইলে তাদের লিখিত প্রতিক্রিয়া পরবর্তী সংস্করণে প্রকাশ করা হবে।
উপসংহার:দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা ঠেকাতে প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদেরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা। তারা বলেন, গুজব ও অরাজকতার ফাঁদে না পড়ে নাগরিক সহযোগিতায়ই স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
Leave a Reply