গুলশানে স্পার আড়ালে শাহ আলম এবং উত্তরা মিরপুরে রিয়া মনির রমরমা দেহ ব্যবসা
হাবিব সরকার স্বাধীন :
রাজধানীর গুলশানে স্পার আড়ালে শাহ আলমের রমরমা দেহ ব্যবসা অন্যদিকে উত্তরা ও মিরপুরে রিয়া মনি নামে এক মক্ষী রানীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অসামাজিক কার্যকলাপের বিশাল নেটওয়ার্ক। এসব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদেরকে দিয়ে ফাঁদ পেতে খদ্দেরের নামে কাস্টমারকে কৌশলে বাসায় এনে বিভিন্ন হোটেলে এনে পরবর্তীতে তাদের কুকর্মের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলিং করে হাতিয়ে নেয় এই চক্র লক্ষ লক্ষ টাকা। জানা যায় ভারতের কোন একটি পতিতালয় থেকে বিভিন্ন কৌশলে পতিতাবৃত্তি শিখে বাংলাদেশে এসেছে এই রিয়া মনি। সে সবাইকে বলে বেড়ায় তার জন্ম নাকি হয়েছে কোন এক পতিতার ঘরে। কাম সাধনা করা কোন পাপ নয় মানুষকে আনন্দ দেওয়া পূর্ণ কাজ এটাই রিয়া মনির বক্তব্য। তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বৃহত্তর মিরপুরের মনিপুরী এলাকা দশ নম্বর এবং ১১ নম্বর সহ মিরপুর ১ ও মিরপুর ডিওএইচএস এ রয়েছে তার অসামাজিক কার্যকলাপ এর ভাড়া বাসা। তার নেটওয়ার্ক জুড়ে আছে বৃহত্তর উত্তরা সহ টঙ্গী গাজীপুর। প্রতিটি বাসায় রয়েছে তিন-চারটি করে মেয়ে এবং দুইটি ছেলে দালাল, এদের মাধ্যমে সে কোন বড়লোক মানুষকে টার্গেট করে প্রথমে মেয়েদেরকে দিয়ে তার সাথে কথা বলায় পরবর্তীতে বাসায় কেউ নাই বেড়াতে আসেন ইত্যাদি বলে কৌশলে বাসায় এনে তার সাথে অপকর্মে লিপ্ত হয় এবং সেগুলো কৌশলে ছবি ও ভিডিও করে পরবর্তীতে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান স্পার আড়ালে চলছে নানারকম অনৈতিক কর্মকান্ড। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কম বয়েসী মেয়েদের চাকরির প্রলোভন দিয়ে ডেকে এনে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করেন স্পা ব্যবসায়ীরা। পতিতাবৃত্তি, মাদকসেবন, ব্ল্যাকমেইলসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করার জন্য অপরাধীদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে এসব স্পা সেন্টার।
তার মধ্যে অন্যতম স্পা ব্যবসায়ী শাহ আলম পরিচালিত স্পা সেন্টারটি। রাজধানীর গুলশান-০১ এ অবস্থিত রবি টাওয়ারের পাশের বিল্ডিং এনসিসি ব্যাংকের উপরে লিফটের ৫ এ নেমে এক সিঁড়ি নিচে গেলেই দেখা মিলবে কেঁচি গেটসহ মজবুত কাঠের দরজা লাগানো এই স্পা সেন্টারের। ভেতরে থাকা সিসি ক্যামেরা দিয়ে বাইরের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করেন শাহ আলমের কর্মচারীরা। দরজায় নক করলে খদ্দের নিশ্চিত হলে তারপর ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। তবে ভেতরে নানা রংয়ের আলোর ঝলমলে পরিবেশ হলেও বাইরে থেকে বোঝার কোন উপায় নেই। কেবল ভেতরে গেলেই চোখে পড়বে স্কুল-কলেজ ও ভার্সিটি পড়ুয়া তরুণীদের আনাগোনা। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, রাতারাতি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় স্পা ব্যবসার আড়ালে কম বয়েসী তরুণীদের দিয়ে পতিতাবৃত্তির কাজ করাচ্ছেন শাহ আলম ও তার সঙ্গীরা। পতিতা ব্যবসার পাশাপাশি মাদক সরবরাহেরও অভিযোগ রয়েছে শাহ আলমের বিরুদ্ধে। জানা যায় এই শাহ আলমের সাথে পতিতা রিয়া মনি রয়েছে গভীর সম্পর্ক ব্যবসার খাতীরে মেয়েদেরকে কখনো স্পাই পাঠায় কখনো রিয়া মনির বাসায় পাঠায় এবং মাদকের ব্যবসাও লেনদেন করে বলে জানা যায়।
সিটি করপোরেশন থেকে সেলুন, বিউটি পার্লার, ব্যায়ামাগার, ফিটনেস সেন্টার কিংবা ক্ষুদ্র ব্যবসার লাইসেন্সের আড়ালে রাজধানীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান-বনানীতে স্পার নামে গড়ে উঠেছে অসংখ্য পতিতালয়। স্পার আড়ালে দেহ ব্যবসা পরিচালনাকারী এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক বিক্রির অভিযোগ। উঠতি বয়েসী তরুণীদের দিয়ে গ্রাহকদের স্পা করানোর নামে অশ্লীল কর্মকাণ্ডসহ স্বল্প পোশাকে সেবা দেয়ার সময়ের ছবি গোপনে ধারণ করে পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করা হয় বলেও জানা যায়।
জানা যায়, বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত মাসিক মাসোয়ারা দিয়ে নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে শাহ আলম। কম বয়েসী তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক ম্যাসেজ পার্লার ও দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগ থাকা স্বত্তেও তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বরং নিয়মিত অবৈধ লেনদেনের বিনিময়ে নির্বিঘ্নে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী পরিবারের উঠতি বয়সের কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে সব বয়েসি মানুষ শাহ আলমের স্পা সেন্টারের (পতিতালয়) সেবা গ্রহীতা। এসব ধনীর দুলালদের সেবা দেয়ার জন্য স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণীদের ভাড়া করে আনা হয় শাহ আলমের কথিত এই স্পা সেন্টারে।
গুলশান-০১ এর স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, ব্যবসার নামে এসব অপকর্ম বন্ধ করতে বললে বিভিন্নভাবে বিভিন্নজনকে দিয়ে হুমকি দেন শাহ আলম ও তার লোকজন। অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ঐ ভবনের আশপাশে সব সময়ই পাহারায় থাকে শাহ আলমের লোকজন। স্থানীয়রা জানান, এই স্পা সেন্টারটিতে (পতিতালয়) কখনই অভিযান পরিচালনা করেনি সিটি কর্পোরেশন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। স্পা সেন্টারটিতে অনৈতিক কাজের জন্য রয়েছে ছোট ছোট বেশকিছু কেবিন। স্কুল-কলেজের উঠতি বয়েসি ছেলেরাসহ যুব সমাজের একটি বড় অংশই খদ্দের হিসেবে যাতায়াত করে এখানে।
খদ্দেরদের আকর্ষণ বাড়াতে ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো হয়। যদিও আমাদের দেশে এমন অনৈতিক উপায়ে স্পা ব্যবসা পরিচালনার জন্য বৈধ কোন অনুমতি নেই। সিটি কর্পোরেশন থেকেও এমন কোন অনুমতি দেয়া হয়না। তবে সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে হোটেল, বিউটি পার্লার, সেলুন কিংবা ব্যায়ামাগারের কথা বলে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে লাইসেন্সের নীতিমালা ভঙ্গ করে চলছে এই অনৈতিক ব্যবসা।
শাহ আলমের স্পা সেন্টারে অত্যাধুনিক ডিজিটাল গোপন ক্যামেরা দিয়ে ধনী ব্যবসায়ীসহ উচ্চ পদস্থ খদ্দেরদের ব্ল্যাকমেইল করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরিবার কিংবা পরিচিতজনদের কাছে গোপন ক্যামেরায় ধারন করা ঐসব ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।
Leave a Reply