মকবুল হোসেন, স্টাফ রিপোটার
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুধুমাত্র একজন কবি নন, তিনি ছিলেন আমাদের জাতীয় চেতনার এক অগ্রদূত। তাঁর লেখনী আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণার বাতিঘর হিসেবে কাজ করেছে। আজ তাঁর ১২৬তম জন্মবার্ষিকীতে আমরা তাঁকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। তাঁর বহুমাত্রিক সাহিত্যকর্ম, বিশেষত সাম্য, মানবতা ও বিদ্রোহের চেতনা আজও আমাদের পথপ্রদর্শক। তরুণ প্রজন্মের মাঝে নজরুলের আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আমরা একটি সহনশীল, ন্যায়ভিত্তিক ও প্রগতিশীল সমাজ গড়ে তুলতে পারব।
বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগ এর সদস্য (সিনিয়র সচিব) এম এ আকমল হোসেন আজাদ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় দিনের আজ ২৬শে মে সোমবার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, কবি নজরুল সম্পর্কে কিছু তথ্য উল্লেখ না করলেই নয়। যেমন বলা হয় তিনি রুটি বানাতেন এটা সত্য নয়। কবি জীবিকার জন্য দোকানে চাকরি নিয়েছিলেন এবং সেখানে কাজ করে কাজের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে চাকরি করেছেন, তবে মূলত তিনি কবিতা ও গান রচনায় নিবেদিত ছিলেন। তাঁর কবিতায় ছিল বিদ্রোহ, প্রেম, সমাজের অসাম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও মানবতার বার্তা। তাঁর লেখা অসংখ্য কবিতা ও গান আজও মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম অতীতে যেভাবে প্রাসঙ্গিক ছিল, ৫২ ভাষা আন্দোলন বলেন, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান বলেন, ৭১ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়ে আমরা যদি ২৪ গণঅভ্যুত্থানের কথাই বলি প্রত্যেকটা সময়ে কাজী নজরুল ইসলামের গান, কবিতা ও সাহিত্য এবং সৃষ্টি কর্মগুলো আমাদের কাছে সব সময় প্রাসঙ্গিক। তিনি সকল ধর্মের, সকল মানুষের কাছে প্রাসঙ্গিক। মানুষকে তিনি মানুষের মর্যাদা দিয়েছেন, সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। তিনি এই সমাজের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগ এর যুগ্মপ্রধান মোঃ হায়দর আলী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জিয়া আহমেদ সুমন, ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ, অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) লুৎফুন নাহার। স্মারক বক্তব্য রাখেন, লেখক, স্থপতি ও নাট্যকার শাকুর মজিদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যগণ, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিনুরাগী, স্বেচ্ছাসেবক, ত্রিশালের বিভিন্ন স্তরের জনগণসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply