মোঃ নুরুন্নবী পাবনা প্রতিনিধিঃ
ক্ষমতার দাপটে সরকারি চাকরিবিধিকে উপেক্ষা করেই পাবনায় মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা থেকেও এখনো বহাল তবিয়তে পাবনা সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাঈদা শবনম। এখনও বিভিন্ন কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
সাঈদা শবনম পাবনা-সিরাজগঞ্জ নারী সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি ও জেলা মহিলা লীগের সভাপতি নাদিরা ইয়াসমিন জলির ভাই ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তৌহিদুল ইসলাম রুপনের স্ত্রী। শবনম ঈশ্বরদী পৌর এলাকার শহীদ আমিন পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের মেয়ে এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বোন।
জানা গেছে, স্বামী, ননদ ও ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে সরকারি চাকরিবিধির কোনো তোয়াক্কা করতেন না। সরাসরি মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। রাজনৈতিক মিছিল, মিটিংসহ মহিলা লীগের ব্যানারে সকল কর্মসূচিতেই নেতৃত্ব দিতেন। অথচ বাংলাদেশের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে সহায়তা করতে পারবেন না।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা জানান, ক্ষমতার দাপটে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গড়ে তুলে ছিলেন লাগামহীন আধিপত্য। খোদ শিক্ষা কর্মকর্তারাও টু শব্দ করার সাহস পেতেন না। শিক্ষা অফিসে স্বামীর ঠিকাদারি কাজে প্রভাব বিস্তার করতেন। বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বাছাইয়ে অঘোষিত সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতেন। সম্প্রতি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের জাতীয় পদক প্রতিযোগিতায় অনুকুল পরিবেশ না থাকায় যোগদানও করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে হুমকি দিয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের নানা ভয়ভীতিও দিচ্ছেন। চাকরির শুরুতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় যোগদান করলেও সেখান থেকে বদলি হয়ে নাটোরের নলডাঙ্গায় বদলি হয়ে আসেন। তার মাত্র কয়েকদিন পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একজনকে বদলি করে নিজ জেলা পাবনা সদরে বদলি হয়ে আসেন।
তবে নিজের ভুল স্বীকার করে অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাঈদা শবনম বলেন, ‘আমার ননদ যেহেতু রাজনীতি করে সেহেতু গিয়েছিলাম। কিন্তু এটা (রাজনীতিতে অংশগ্রণ) সরকারি চাকরিবিধির মধ্যে পড়ে না, এটা আমার ভুল ছিল। কিন্তু আপনারা এই বিষয়টি একটু দেখবেন, ইয়ে কইরেন না ভাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভবিষ্যতের খুব বেশি সতর্ক থাকবো।’
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেন, ‘আমি তো নতুন, তার রাজনীতির বিষয়টি আমার জানা নেই। এবিষয়ে কেউ অভিযোগও দেয়নি। এখন দেখি চিন্তাভাবনা করে দেখি কি করা যায়। আগে বিষয়টা জানি, তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে কিভাবে কি করা যায়।’
Leave a Reply