চট্টগ্রামের বৃহৎ উপজেলাই হলো ফটিকছড়ি। আয়তনে ৭৭৩.৫৫ বর্গকিলোমিটার এই জনপদ শুধু আয়তনে নয়, প্রশাসনিক কাজের বহরেও দেশের অন্যতম। ২২°৩৫’ হতে ২২°৫৮’ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৩৮’ হতে ৯১°৫৭’ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত ফটিকছড়িতে রয়েছে ২টি থানা, ১৮টি ইউনিয়ন, ২টি পৌরসভা, ৪টি পুলিশ ফাঁড়ি। প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ এই উপজেলায় রয়েছে ১৭টি চা বাগান, ৩টি রাবার বাগান ও ৫৬টি হাটবাজার। আর এখানকার গর্ব হালদা নদী, যা এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাত ও সমাদৃত।
এই বিশাল আয়তনের উপজেলায় বর্তমানে প্রশাসনিক দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে একাই নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নেই। পাশাপাশি নাজিরহাট ও ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের অপসারণের পর থেকে দুই পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বও তিনিই সামলাচ্ছেন।
বর্তমানে সরাসরি ৬টি ইউনিয়নের প্রশাসনিক দায়িত্ব, ২টি পৌরসভার প্রশাসক, ৯২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব, ২২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কমিটির সভাপতি, ১০৬টি উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব একাই পালন করে যাচ্ছেন এই প্রশাসক। এক কথায়, ফটিকছড়ির প্রতিটি সেক্টরে প্রশাসনিক ভার এখন তার কাঁধেই।
এর বাইরেও এলাকায় সামাজিক বিচার-আচার, চোরা চালান প্রতিরোধ, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, কাঠ পাচার রোধ, হালদা নদীর দখলদার উচ্ছেদ ও পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনাও করছেন নিয়মিত। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করে সেবা নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় এই বিপুল দায়িত্বের পরেও তার মুখে নেই একটিবারও অভিযোগের সুর। তিনি বলেন, “সরকার পরিবর্তনের পর দায়িত্ব বেড়েছে ঠিক, তবে মানুষের জন্য কাজ করাটাই আমার জীবনের বড় সৌভাগ্য। কষ্ট হলেও আমি চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে। এটাই আমার তৃপ্তি।”
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ইউটিউব ও ফেসবুক কনটেন্ট ক্রিয়েটর তার বিরুদ্ধে কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ তুললেও, তাতে একটুও কান না দিয়ে যথারীতি সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলা আর সেবার মাধ্যমে ফটিকছড়িকে একটি উন্নয়নমুখী, সন্ত্রাসমুক্ত, পরিবেশবান্ধব ও জনবান্ধব উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতেই তার এই নিরলস প্রচেষ্টা ও নিরন্তর পথচলা।
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এই উপজেলায় চা ও রাবার বাগান এবং হালদা নদীর রেণু উৎপাদন রক্ষায় তিনি রয়েছেন সদা সরব। হালদা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, দখল এবং দূষণ রোধে পরিচালনা করছেন একের পর এক সফল অভিযান।
দেশের বৃহত্তম উপজেলায় এমন বিপুল প্রশাসনিক দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে একাই পালন করছেন মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। অত্যন্ত সৎ, কর্মঠ, পরিশ্রমী এবং নিষ্ঠাবান প্রশাসক হিসেবে ইতোমধ্যে তিনি চট্টগ্রামের প্রশাসনিক অঙ্গনে সুনাম কুড়িয়েছেন। তার নিষ্ঠা, সততা ও মানবিক জনসেবার মানসিকতা আজকের সমাজে বিরল উদাহরণ।
ফটিকছড়ি উপজেলা শুধু চা-রাবার আর হালদা নদীর জন্যই নয়, সুফি-সাধক এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও গৌরবময় ভূমিকা রেখেছে। এ জনপদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারি নানা উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরীর কার্যকর নেতৃত্বে আজ সাধারণ মানুষ সেবা পাচ্ছে ঘরে বসেই। তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি সেবা দ্রুত জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুষ্ঠু, সুন্দর, সন্ত্রাসমুক্ত, উন্নয়নমুখী, আলোকিত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ফটিকছড়ি গড়াই এখন প্রশাসনের লক্ষ্য।
পরিচিতি : মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা। সততা, দক্ষতা ও মানবিক নেতৃত্বগুণে ইতোমধ্যে প্রশাসনিক মহলে আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন তিনি। বর্তমান দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রেও তার নিষ্ঠা ও পরিশ্রম ফটিকছড়িবাসীর কাছে প্রশংসিত।
Leave a Reply