সাব্বির হোসেন।।
আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে ২ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে তেরখাদা উপজেলার ২ নং বারাসাত ইউনিয়নে এলাকায় বিবদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় তৈরী অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গোটা বারাসাত জুড়ে দুই পক্ষের লোকজন খন্ড খন্ড সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের পাশাপাশি লুটপাটের ঘটনাও ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষের সূচনা হয়। প্রায় ২ঘন্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭/৮জন আহত হয়। সংঘর্ষের ঘটনার খবর শুনে তেরখাদা থানার অফিসার্স ইনচার্জ মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি টিম ও যৌথ বাহিনীর একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সংঘর্ষে জড়িতরা যে যার মতে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক এলাকার পরিবেশ শান্ত হলেও বারাসাত ও হরিদাসবাটী এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনার সাথে জড়িত কাছেদ মোল্যা ও ইলিয়াছ মোল্যা সহ মোট ৭ জনকে আটক করে। বায়াসাত এলাকায় যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত আছে। এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বারাসাত এলাকায় বিবদমান দু’টি গ্রুপের সংঘর্ষ, সংঘাত ও লুটপাটের মত ঘটনা চলে আসছে। এরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতি বছর কয়েকদফা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সূত্রে জানা গেছে। ৯নং ওয়ার্ডের রবিউল ওরফে টুটুল মেম্বার ও কালা মোল্লা ভিন্নভাবে আবুল বাজারে জন সম্মুখে পায়তারা দিয়ে বলেন। জাহাঙ্গীর মাস্টারের ছেলে সুজন মোল্লা(৫০)ও রিপন মোল্লা (৪০)এরা বাড়িতে এসে যাতে ঈদ করতে না পারে, এবং ওদের জমির ধান কেটে নিবো দেখি ওরা কি করতে পারে। এ কথা শোনার পর রিপন মোল্লা ভয়ে ঈদ করতে বাড়িতে না আসলেও এলাকার মানুষ বিষয়টি শুনে খুবই ক্ষিপ্ত হয়, টুটুল মেম্বার ও কালা মোল্লার এই কথার সূত্রপাত ধরেই আধিপত্য বিস্তার নিয়েই এসব ঘটনা ঘটে। যুগ যুগ ঘরে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে দাঙ্গা হাঙ্গামা চলে আসলেও পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা আজও পরিলক্ষিত হয়নি। যুগ যুগ ধরে থানা পুলিশ কোনোমতে সংঘর্ষ সংঘাত দমিয়ে রাখলেও নির্মূল করতে পারেনি আজও। ফলে প্রতিবছরই অতীতের ঐতিহ্য ধরে রেখে নিয়মনীতি প্রশাসনকে উপেক্ষা করে বারাসাতবাসী তাদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। কবে কখন সংঘর্ষের যবনিকা হবে তা কেউ বলতে পারে না। সংঘর্ষের মত জীবন বিধ্বংশী কর্মকান্ডে জড়িয়ে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী বারাসাত গ্রাম শিক্ষা সংস্কৃতির দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়ছে। কতিপয় নরপশুর খামখেয়ালীপনার কারণে স্বপ্নের বারাসাত এখন অবহেলিত বারাসাতে রূপান্তরিত হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এলাকার সচেতন মহল বলেন, রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে বিবদমান গ্রুপের অনেকেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছে আবার পঙ্গুত্ববরণ করে অনেকে অসহাযত্ব এবং দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। বারাসাত থেকে এসব আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যক্রম নির্মূল করার জন্য প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন এবং হরিদাসবাটি পুলিশের একটি ক্যাম্প দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট বিনীত অনুরোধ জানান এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী মহল। তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মেহেদী হাসান বলেন ১ নং অজগড়া ইউনিয়নের বলরামপুর যে পুলিশ ক্যাম্পটি আছে সেটা ওখানে খুব একটা জরুরী না কারণ তার পাশেই আছে আরেকটি ক্যাম্প তাই বলরামপুর ক্যাম্পের থেকে হরিদাসবাটি ক্যাম্প হওয়া জরুরি বলে আমি মনে করি। ওসি মেহেদী হাসান বলেন আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে এই বিষয়টা নিয়ে জরুরী ভাবে আলাপ করব যাতে হরিদাসবাটি একটা ক্যাম্প দেওয়ার জন্য, যদি একটা পুলিশ ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে এলাকার পরিবেশটা একটু শান্ত হবে বলে আমি মনে করি।
Leave a Reply