স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে শতবর্ষী কবরস্থানে কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করতে যাচ্ছে একটি পক্ষ। এমতবস্থায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেখা দিয়েছে এলাকায় শান্তি শৃংখলা ভঙ্গের শংকা।
জানা যায়, উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার ঝংকার মোড়ের পশ্চিম পাশের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী পুরাতন একটি কবরস্থান। সম্প্রতি উক্ত কবরস্থানে মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম সূচনা করেন একটি পক্ষ।
ক্ষোভের সৃষ্টি হয় স্থানীয়দের মাঝে। তারা জানান এটি একটি শতবর্ষী কবরস্থান।
উক্ত কবরস্থানের আর. এস খতিয়ান নং- ৩৮৪ তৎ দাগ নং- ৫৮১ এবং তৎ-বি.এস. খতিয়ান নং ১১১৪ এর দাগ নং- ১০১৯। উল্লেখ্য যে, আর.এস. খতিয়ান এবং বি. এস খতিয়ানের রেকর্ডেও কবরস্থান থাকার বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে এবং সরকারি মৌজা সিট পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় উক্ত দাগের স্থানটি কবরস্থান হিসাবে রেকর্ডভুক্ত। তা স্বত্বেও একটি মহল ষড়যন্ত্র ভাবে এ মসজিদ নির্মাণ করছেন।
এছাড়া ঝংকার মোড়ের অল্প দূরত্বে চারপাশে চারটি মসজিদ রয়েছে। পরিত্যক্ত বা ক্রয়ক্রিত জায়গায় মসজিদ না করে একটি শতবর্ষী কবরস্থানে মসজিদ নির্মাণ কেন?
সুন্নি মতাদর্শের এলাকার কওমী মতাদর্শের এ মসজিদ নির্মাণ এলাকায় শান্তি ভঙ্গের দীর্ঘমিয়াদী পরিকল্পনা বলেও তারা উল্লেখ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিক তালুকদার বলেন, অনেক স্থানে মসজিদ নির্মাণের দাবী তোলা হয় কিন্তু নাজিরহাট ঝংকার মোড়ে মসজিদ নির্মাণে স্থানীয়দের কোন দাবী উঠেনি। অসংখ্য কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ কোন ভাবে কাম্য নয়।
মোহাম্মদ জুনু, মোহাম্মদ মামুন, মোহাম্মদ জাহেদসহ আরো অনেকে বলেন,উক্ত কবরস্থানে আমাদের স্বজন আপনসহ পূর্ব পুরুষদের কবর রয়েছে। তাদের কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ আমরা মেনে নিতে পারিনা।
গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ নাজিরহাট শাখার সভাপতি মওলানা ইউছুফ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন শাহ বলেন,কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ ইসলামী শরীয়ত মতে কোনভাবেই অনুমোদন করেনা। কবরের উপর নামাজ পড়া এবং মসজিদ নির্মাণ করা হারাম বা কাবীরাহ গোনাহ্।
উল্লেখ্য,উক্ত কবরস্থানে ৮ শতক জায়গা খাস হয়ে পড়ে। উক্ত খাস জায়গায় নাজিরহাট বাজার সড়ক সংলগ্ন পূর্ব পশ্চিম বেশ কিছু অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠলে প্রশাসন তা উচ্ছেদ করে উদ্ধার করে।
একটি পক্ষ সে ৮ শতক জায়গা লিজ নেওয়ার নামে উত্তর দক্ষিন দখল নিয়ে অনেকগুলো কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা ওনাদের জানালে, প্রশাসনতো উদ্ধার করছে পূর্ব পশ্চিম,
আপনারা এভাবে দখল নিচ্ছেন কেন? তারা বলেন ইউ এনও সাহেব আমাদের এভাবে জায়গা বুঝিয়ে দিতে পারবেননা।
এদিকে এলাকাবাসী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং মানববন্ধন,প্রতিবাদসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে।
এমতবস্থায় কবরস্তানের উপর মসজিদ নির্মাণ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজমান করছে।
শতবর্ষী কবরস্থানের পবিত্রা রক্ষায় তা পুনরুদ্ধার এবং এলাকায় উত্তেজনা পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সচেতন মহল।
Leave a Reply