রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর।
প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অসুস্থতার ভান করে হুইলচেয়ারে বসে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করায় অস্ত্র মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন বাবুকে কারাগারে পাঠিয়েছেন রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মোঃ নাজির।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর ২০২৫) রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ আদেশ দেন বিচারক।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন বাবু পীরগাছা থানায় দায়েরকৃত অস্ত্র মামলা (জি.আর. নং-২২২/২৫)-এর আসামি। ৬৫ বছর বয়সী এই আসামি মেসার্স মাল্টিট্রেড ইন্টারন্যাশনাল আর্মস ডিলারের পরিচালক। তিনি রংপুর মহানগরীর কোতোয়ালি থানাধীন মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা।
এর আগে তিনি হাইকোর্ট বিভাগ থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ পান। সেই অনুযায়ী গত ১২ অক্টোবর তিনি রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত ১৬ অক্টোবর তারিখে শুনানির দিন ধার্য করেন।
(১৬ অক্টোবর) জামিন শুনানিতে হাজির হয়ে আনোয়ার হোসেন বাবু অসুস্থতার অজুহাতে হুইলচেয়ারে বসে আদালতে প্রবেশ করেন। তবে আদালতের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি আদালতের নিচতলা থেকে হেঁটে উপরে ওঠেন এবং পরে হুইলচেয়ারে বসে আদালতকক্ষে প্রবেশ করেন।
বিচারক ফজলে খোদা মোঃ নাজির সিসিটিভি মনিটরের ফুটেজ পর্যবেক্ষণ পূর্বক আসামির ইচ্ছাকৃতভাবে অসুস্থতার ভান করে আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা মর্মে তার আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিকে সি-ডব্লিউ (কাস্টডি ওয়ারেন্ট) মূলে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
রংপুর জেলা জজ আদালতের পুলিশ ইনচার্জ (কোর্ট ইন্সপেক্টর) আমিনুল ইসলাম বলেন,
“অস্ত্র মামলার আসামি আনোয়ার হোসেন বাবু আজ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সুস্থ অবস্থায় হেঁটে এসে আদালতে ঢোকার মুহূর্তে হুইলচেয়ার ব্যবহার করে জামিন প্রার্থনা করেন। বিষয়টি বিজ্ঞ বিচারক ফজলে খোদা মোঃ নাজির স্যারের নজরে এলে তাঁর নির্দেশে আসামিকে হেফাজতে নেওয়া হয় এবং পরে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, “আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন সম্পূর্ণ সিসিটিভি মনিটরে নিয়ন্ত্রিত। কেউ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না।
বিচার সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, আদালতের প্রতি সম্মান ও ন্যায়বিচারের মর্যাদা রক্ষায় এমন পদক্ষেপ বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আরও দৃঢ করবে।
Leave a Reply