সম্পাদকীয়
সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন দামের কারণে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। তারা আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছে না। এমন এক সময়ে আর মাত্র তিন দিন পরই নতুন বাজেট ঘোষণা দিতে যাচ্ছে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ভেতর দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলে দেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবারও সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই কঠিন বাস্তবতায় অর্থ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের নিত্যব্যবহার্য অনেক পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে, যা জনজীবনে নতুন করে ভোগান্তি সৃষ্টি করবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এলইডি বাতি, শিশুদের খেলনা, মশা-মাছি মারার উপকরণসহ নির্মাণসামগ্রী; যেমন—সিমেন্ট, রড, টাইলস, স্ক্রু, নাট-বোল্ট ইত্যাদিতে শুল্ক বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে নির্মাণশিল্পে শুল্কের বোঝা বাড়লে আবাসন খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং সাধারণ মানুষের জন্য গৃহ নির্মাণ আরো ব্যয়বহুল হবে।
যদিও আইএমএফের শর্ত এবং রাজস্ব বৃদ্ধির প্রবণতা এই শুল্ক বৃদ্ধির পেছনে কাজ করছে বলে বলা হলেও এর ফলে স্থানীয় শিল্প অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়বে এবং আমদানিনির্ভরতা বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে নতুন করে শুল্ক বাড়ানো হলে আরেক দফা দাম বাড়তে পারে। এতে মানুষের জীবনযাপনের ব্যয়ও বাড়বে। কিছু পণ্যে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব থাকলেও অতীতে দেখা গেছে, এর সুফল খুব একটা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে না।
কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারও পূর্ববর্তী সরকারের পথ অনুসরণ করে মানুষের ওপর করের বোঝা চাপাচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
জনগণের কর্মসংস্থান ও আয় না বাড়িয়ে শুধু খরচ বাড়ানো হলে তা জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবেই।
এই বাজেট সত্যি মানুষের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে।
Leave a Reply