সেলিম চৌধুরী হীরাঃ
লাকসামে নওয়াব ফয়েজুন্নেসা চৌধুরাণীর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে ফয়েজুন্নেসা বিতর্ক উৎসব ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে আল-আমিন ইনস্টিটিউট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং রানারআপ হয়েছে এ. মালেক ইনস্টিটিউট (রেলওয়ে হাইস্কুল)।
৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকেল লাকসামে নবাব ফয়জুন্নেছা বিতর্ক উৎসবের ফাইনাল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উৎসব ঘিরে তরুন প্রজন্মের মাঝে ফয়েজুন্নেছা চর্চা করার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে এবং আয়োজনটি হয়েছে প্রশংসিত।
নবাব ফয়েজুন্নেছার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি (বর্তমানে জাদুঘর) প্রাঙ্গনে লাকসাম উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও পৌরসভা প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্কার কমিশনের প্রধান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার ও বিশেষ অতিথি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, লাকসাম থানা অফিসার ইনচার্জ নাজনীন সুলতানা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাজিয়া বিনতে আলম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহমেদ উল্লাহ সবুজ, উপজেলা মৎস্য সিনিয়র কর্মকর্তা মোঃ শওকত আলী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা উপন্যাস চন্দ্র দাসসহ উপজেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ, সাংবাদিক, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, প্রতিযোগী শিক্ষার্থীগণ ও অন্যান্য শিক্ষার্থীগণ৷
গত ১৯ মে লাকসাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিতর্ক উৎসবের প্রথম রাউন্ড, ২০মে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।
নবাব ফয়জুন্নেছাকে ঘিরে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদের এই উদ্যোগ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিতর্ক প্রতিযোগীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সঞ্চার করছে। এই প্রতিযোগিতা প্রথম থেকে লাকসামের ১৬টি স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ ইতিমধ্যে লাকসামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে নবাব ফয়জুন্নেছা জীবন ও জনহিতকর কর্মের ইতিহাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী নারী শিক্ষার অগ্রদূত। তিনি বেগম রোকেয়ার জন্মের ৭ বছর পূর্বে কুমিল্লায় গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার জমিদারীর ১৪ টি মৌজায় স্হাপন করেছেন প্রথমিক বিদ্যালয়, মক্তব, মাদরাসা ও বালিকা বিদ্যালয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সহ দেশের অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় রয়েছে এই মহীয়সী নারীর অবদান। ভারতের নদীয়া জেলায় কৃষ্ণনগরে তিনি প্রতিষ্ঠা করন বালিকা বিদ্যালয়। পবিত্র হজ্জব্রত পালন করতে গিয়ে মক্কা শরীফে প্রতিষ্ঠা করেন মুসাফির খানা।
এতোদিন নবাব ফয়জুন্নেছা নারী শিক্ষার অবদানের বিষয়টি যথায়থভাবে উপস্থাপিত হয়নি। ফলে নতুন প্রজন্মের কাছে এই মহীয়সী নারীর অবদান কথা অজানাই রয়ে গেছে।
এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা উদ্যোগ সে অপূর্ণতায় কিছুটা হলেও পূর্ণতা দিতে ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করছে সচেতন মহল।
Leave a Reply