হাসনাত তুহিন ফেনী প্রতিনিধি:-
দুঃখিত, রাখাল রাজা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। সিপাহী ও জনতার ব্যর্থ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ৭৫-৭৮ সময়কালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা এবং ভীরু ইন্ডিয়ান কাপুরুষের গুপ্ত হত্যায় যে দলের উপর ভরসা রেখে সঁপে দিয়েছিলেন আপন প্রাণ। হে বীর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আপনাদের স্বপ্ন জনতার চোখে লালিত হয়। তাই যে দেশপ্রেমের প্রেরণা নিয়ে আরো লক্ষ হাজার বিপ্লবীদের ভরসায় সমঝোতা না করে জীবন করেছেন বলিদান, তাদের অধিকাংশ কেন যেন মনে হচ্ছে সাংগঠনিক ভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রকৃত দেশ প্রেমের আদর্শ ধারণ করতে হয়েছেন চরমভাবে ব্যর্থ।
সেদিনও তারা বুঝতে পারেনি রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে তারা কি হারিয়েছিলো?!! আজো তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত এই প্রযুক্তির আধুনিক বিশ্বে!! অথচ সেই একজন জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে শুধু একজন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে বিশ কোটি বাংলাদেশী স্বাধীনতার তিপ্পান্ন বছর পরও আজও ভারতীয় সেবাদাসের ভিত্তিতে আমাদের উপর প্রভুত্ব বহাল রেয়েছে। মেজর জিয়াকে হত্যার চুড়ান্ত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৭ নভেম্বর, ৭৫ এর সিপাহী জনতার বিপ্লবের কফিনে চুড়ান্ত পেরেক ঠুকে আজ অবধি একাত্তরের অর্জিত স্বাধীনতা বিশ্ব দরবারে নিজেদের অর্জিত সক্ষমতা হিসাবে ব্যবহার করে আসছে ভীনদেশ ভারত। স্বাধীনতা নামক অদৃশ্য এই সুপার পাওয়ার বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যবহারে কেউ যেন পারদর্শী হয়ে উঠতে না পারে, তাই সবসময়ই ভারত এদেশের জাতীয় নিরাপত্তার অস্থিমজ্জায় হয় বাংলাদেশী বেজন্মা ভারতীয় দালালদের পুষে রেখেছে অথবা নিজেদের কাপুরুষ স্পাইদের মাধ্যমে হত্যা করে মেজর জিয়া হতে আব্রার ফাহাদদের। অভ্যন্তরীন স্বাধীন একটি দেশে স্বাধীনতার প্রয়োজন পড়েনা। স্বাধীনতা প্রয়োজন পড়ে ভীনদেশে প্রবাসী নাগরিকদের আভিজাত্য সমুন্নত রেখে যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত এবং জাতীগত অবস্থানে পণ্য, সেবা বিনিময়ে পারস্পরিক সম্মানের সাথে সৌহার্দ্যের সাথে দেশের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নের স্বার্থে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিশ্চিয়তায়ন মূলত স্বাধীনতার কাজ।
ক্রমাগত ষড়যন্ত্রের বিস্ফোরণে পরিশেষে এক অকুতোভয় দেশ প্রেমিক মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের মৃত্যু সুনিশ্চিতের মাধ্যমে ৭১ এ অর্জিত স্বাধীনতা এবং ৭৫ এর সিপাহী-জনতা বিপ্লব চুড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ করে ভারত হয়ে উঠে বাংলাদেশের আঞ্চলিক প্রভু। আর বিশ্বে তো বাংলাদেশের অবস্থানই নেই ভারতের চোখে চিনতে হয় বাংলাদেশকে।
একজন জিয়াউর রহমানের অভাবে চুয়ান্ন বছর এই জাতি গোলামীর শিকলে বন্দী ছিলো। ১৬ – ২০ কোটি মানুষের তেপ্পান্নটা বছর লেগেছে সেখান থেকে ভারতকে মুখোমুখি জবাব দেওয়ার জন্য নিজেদের আজকের অবস্থান প্রস্তুত করতে। অথচ এক জিয়া বেঁচে থাকলে ভারতকে ছাড়িয়ে অনেক আগেই বাংলাদেশ হয়ে উঠতো একটি উন্নত রাষ্ট্রে। বিপ্লবীদের কাজ শেষের আগে তাদের অপমৃত্যু বিপ্লবকে আরো একটি নতুন প্রজন্মের বিপ্লবীদের পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করে। পৃথিবীর ইতিহাসে সে সময়টা দুইহাজার বছরের অধিকও রয়েছে। বিপ্লবীরা বিপ্লব পুর্নাঙ্গ না করলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে একটি ছোঁয়াছে রোগের মতো। কেননা বিপ্লব কখনো বিপ্লবীদের ছাড়া সুগঠিত হয় না। তাই মেজর জিয়াউর রহমান হতে ড. মোহাম্মদ ইউনুস পর্যন্ত আমাদের ব্যর্থতার ইতিহাস স্বাধীনতা পেয়েও এতটা সুদীর্ঘ হয়েছে। এক বিপ্লব কে পরবর্তী বিপ্লবীদের মাঝে বিপ্লব হস্তান্তর জাতি হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদী জাতিগত অবস্থানে পিছিয়ে পড়ার অভিশাপ। বিপ্লব যথার্থ বাস্তবায়ন করা না গেলে, প্রতিটি বিপ্লবই সে জাতির জন্য ভয়াবহ অভিশাপ। ইতিহাস তেমনটাই বলে।
ঠিক পচাত্তরের সিপাহী জনতার বিপ্লবের মতো ভারত তার সর্বশক্তি নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে চব্বিশের বিপ্লবকে চুড়ান্তভাবে ব্যর্থ করার ডু’ অর ডাই’ মিশনে। ভারতীয় দালাল এবং তাদের প্রভুদের চুড়ান্ত ষড়যন্ত্রে দেশের প্রতিটি কোণা চুড়ান্ত সময়ে নিমজ্জিত বর্তমান। সত্যি এটাই হয়তো সবচেয়ে বড় খারাপ লাগা হবে, একজন বিপ্লবীর দেশের তরে প্রাণ উৎসর্গের বিনিময়ে তারই শ্রমে ঘামে গড়া একটি বহুদলীয় গনতন্ত্রে বিশ্বাসী দল বিএনপির একটি অংশ আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যাকারী ভারতীয় দালালদের ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছে ৭১ পরবর্তী সময়ের থেকে সহস্রগুণ শক্তিশালী হয়ে। যা আমাদের অনেক নেতাকর্মীদের মগজধোলাই ‘র’ মার্কা কথাবার্তায় স্পষ্ট। নিঃসন্দেহে এটি একটি সতর্কতা জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে একাত্তরে অর্জিত প্রকৃত স্বাধীনতার বাস্তবায়নের ব্যর্থতা প্রতিরোধে একটি চুড়ান্ত পদক্ষেপ হিসাবে। ভারতের মাধ্যমে মোটিভেটেড বিএনপির একটি অংশ স্পষ্ট বাকীদের প্রকৃত অর্থে বিভ্রান্ত করছে যা জাতীগত অবস্থানে সকলের জন্য আত্মঘাতি হতে পারে। ভাবতে পারছিনা বুকটা কেঁপে যাচ্ছে, কলম পিছলে যাচ্ছে, ভাবা যায়?!! একদম পনেরো-বিশ অথবা পঞ্চাশ বছর পর আরো একটি গণঅভ্যুত্থান। এই জাতি কি আদো প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতাকে বুঝবে না? এতো লক্ষ কোটি শহীদের নিজেদের চেতনায় ধারণের মাধ্যমে কর্মকাণ্ডে লালন করবে না। কবে আমরা স্বাধীন হবো?
ক্ষমতা আলাদীনের আশ্চর্য্য প্রদীপ নয় বরং ক্ষমতা মানে জনতা। ৪৭ এবং ৭১ এ জননন্দিত নেতা ভাসানী এবং শেরে বাংলার প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী মুসলিমলীগ দেশমুখী কাজে হয়েছে জনতার প্রাণস্পন্দন। পরবর্তীতে মুজিবের বাকশাল কায়েম আর তার খুনী সন্তানের স্বৈরাচার হয়ে উঠার মাধ্যমে এই জনতা এতোটা ঐতিহ্যমন্ডিত দলকেও ফেলেছে ঘৃণার আস্তাকুঁড়ে অথচ দলের প্রতিষ্ঠাতারা সব নিষ্কলঙ্ক দেশপ্রেমিক বিশ্বনেতা। দালালের হাতে দল সর্বশেষ পরিণতি আওয়ামী লীগ। কার হাতে প্রতিষ্ঠিত দল কার মাধ্যমে ধ্বংস হয়? এগুলো ইতিহাস জীবন্ত শিক্ষা কোন ফেলনা নয়।
পরিশেষে, প্রতিটি ক্রিয়ারই নাকি সমান প্রতিক্রিয়া থাকে। প্রিয় দেশের তরে আজ অবধি প্রাণ উৎসর্গ করা সকল শহীদি দাফনের প্রতিক্রিয়া কবে পাবো?!!! কবে? কবে? কবে? বাংলাদেশ জানতে চায়!!!
Leave a Reply