মোঃ নুরুন্নবী পাবনা প্রতিনিধিঃ
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, কোনো কোনো দল মনে করছেন তারা ক্ষমতায় এসে উনারা আওয়ামী স্টাইলে নির্বাচন করবেন। কিন্তু আমরা বলতে চাই বাংলাদেশে এটা আর হবে না ইনশাআল্লাহ। সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে। ইউনুস সরকার নির্বাচনের যে রোডম্যাপ দিয়েছেন সেই ডেডলাইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। তা নাহলে এই সরকারকে আর কেউ বিশ্বাস করবে না।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে সুজানগর উপজেলা ও বেড়া জামায়াতের আয়োজিত অনুষ্ঠান সুজানগর অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টার ও পৌর হাট মাঠের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের দুই মন্ত্রীর এক টাকাও দুর্নীতি পায়নি। আমাদের ইতিহাস সৎ নেতাকর্মী তৈরির। নির্দোষ এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তি, দলের নিবন্ধন ও প্রতিক ফিরিয়ে দিতে হবে। আগে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। এরপর জাতীয় নির্বাচন হবে। কোন সরকারের অধিনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। আমরা সুখী সমৃদ্ধশালী আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দুর্নীতিমুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়তে কাজ করছি।
এ জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। শহীদ আমীরে জামায়াত মতিউর রহমান নিজামীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রথম শ্রেণির সব নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদিকেও কারাগারে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি বলেন, আ.লীগের সব নেতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। এদের কোন ক্ষমা করা চলবে না। এরা অসংখ্য মানুষকে বছরের পর বছর আয়নাঘরে গুম করে রেখেছিল। দেশের শাসন ব্যবস্থা নির্বাচন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বললেই গুমের শিকার হতে হতো। এখনো অনেকের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিগত পতিত সরকার ভারতীয় দালাল ঘসেটি বেগম হাসিনা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। হাসিনার আমলের ভূয়া নির্বাচন কমিশনারদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিচারপতি খাইরুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে হবে। সব হত্যাকান্ডের দায় তাকে নিতে হবে।
উত্তরবঙ্গের বর্ষিয়ান এ নেতা সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহতের পরিবারের একজন করে যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকুরী দিতে হবে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত এদের বিচার দ্রুত করতে হবে।শুধু শেখ হাসিনাকে বিচার করলে হবে না, একসঙ্গে যারা জড়িত সবাইকে বিচার করতে হবে। বিদেশে পাচারের টাকা ফেরত আনতে হবে।
সুজানগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর, পাবনা-২ (সুজানগর ও বেড়ার আংশিক) আসনের এমপি পদপ্রার্থী জননেতা অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল, পাবনা জেলা জামায়াতে নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, জামায়াতের ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ব্যরিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন, পাবনা- ৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আলী আসগর, পাবনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার খান, সহকারী সেক্রেটারি আবু সালেহ মো: আব্দুল্লাহ, এসএম সোহেল ,পাবনা সদর জামায়াতের আমীর আব্দুর রব, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পাবনার সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা শহর শাখার সভাপতি ফিরোজ হোসাইন, জেলা শাখার সভাপতি ইসরাইল হোসাইন শান্ত। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্য শেষে পাবনার ৫টি আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়ন প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন রফিকুল ইসলাম খান। পরে তাদের নিয়ে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অনুষ্ঠানস্থল থেকে় পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলার সামনে গিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বেড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আতাউর রহমান সরকার ও সুজানগর জামায়াতের সেক্রেটারি টুটুল হোসাইন বিশ্বাস।
Leave a Reply