1. lifemedia766@gmail.com : admin : Badsah Deoan
  2. aglovelu99@gmail.com : Ag Lovelu : Ag Lovelu
  3. infocrime24@gmail.com : info crime24 : info crime24
  4. crimereport24@gmail.com : Crime Report : Crime Report
  5. musasirajofficial@gmail.com : Musa Asari : Musa Asari
  6. crime7775@gmail.com : Ariful Islam : Ariful Islam
  7. nurealomsah@gmail.com : Nure Alom Sah : Nure Alom Sah
আশার শিকল ভাঙার মহাকাব্য: ‘দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ এক আবেগস্পর্শী চলচ্চিত্র-রূপকথা - Crime Report 24
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নেত্রকোণায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ১২কেজি গাঁজাসহ ২জন আটক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার অগ্রগতি ও উন্নয়ন শীর্ষক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কলাপাড়ায় অসহায় গৃহহীনের জন্য ঘর নির্মাণ’র চাবি হস্তান্তর ও খাদ্য সহায়তা প্রদান আমতলীতে তালাকের তথ্য গোপন করে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, আদালতে মামলা! কলাপাড়ায় শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলায় গুরুতর আহত-৩ পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং বরিশালের উন্নয়ন ঘিরে গভীর ষড়যন্ত্র ধামরাইয়ে সেলফি পরিবহনের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত আপেলের পাহাড়ে নতুন লুকে শাবনূর ময়মনসিংহ সিপিএসসি, র‍্যাব-১৪ কর্তৃক মাদকসহ ০১ নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার কালিয়াকৈরে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব সহ দুই শিক্ষকে অব্যাহতি

আশার শিকল ভাঙার মহাকাব্য: ‘দ্য শশাঙ্ক রিডেম্পশন’ এক আবেগস্পর্শী চলচ্চিত্র-রূপকথা

  • প্রকাশকাল: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

লেখা- মোঃ আবু মুসা আসারি 

ফ্র্যাঙ্ক ড্যারাবন্ট নির্মিত The Shawshank Redemption কেবল একটি কারাগারের গল্প নয়, এটি এক মানবাত্মার জয়গাথা—প্রতীক্ষার, আশার, বন্ধুত্বের এবং আত্মমুক্তির। এটি এমন এক চলচ্চিত্র যা উচ্চকণ্ঠে চিৎকার করে না, বরং ধীর অথচ দীপ্ত স্বরে আত্মার গভীরতম কোণ স্পর্শ করে। প্রতিটি দৃশ্য যেন ছায়াছবির পাতায় আঁকা এক একটি জীবনগাথা—আলো-আঁধারের মেলবন্ধনে গাঁথা এক অতল সৌন্দর্য।

কাহিনি ও কাঠামো: ধৈর্য্য আর প্রত্যয়ের কাব্যিক পুনর্গাথন-
এন্ডি ডুফ্রেইন (টিম রবিনস)—এক নিষ্পাপ ব্যাঙ্কার, যিনি ভুলভাবে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। শশাঙ্ক জেলের প্রাচীরে বন্দি হয়ে তিনি পরিচিত হন রেড (মর্গান ফ্রিম্যান)-এর সাথে, যিনি জেলে ‘যা চাও, তা এনে দিতে পারে’ এমন একজন চরিত্র।

এই সম্পর্ক, এই প্রতীক্ষা, এই যন্ত্রণার ভিতর দিয়ে ধীরে ধীরে একটি শক্তিশালী কাহিনি গড়ে ওঠে—যেখানে কারাগারের শীতলতা ছাপিয়ে উঠে আসে আশার এক দীপ্ত মশাল। গল্পের গতি ধীর, প্রায় নীরব—কারণ এটি সময়ের কথা বলে, যন্ত্রণার কথা বলে, এবং ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা বিশ্বাসের কথা বলে।

মর্গান ফ্রিম্যানের আবেগসিক্ত বর্ণনা চলচ্চিত্রটিকে এক অনন্য সৌন্দর্যে পৌঁছে দেয়—তিনি কেবল বর্ণনাকারী নন, তিনি দর্শকের আত্মার সঙ্গী।

চরিত্রায়ন: নীরবতা ও সংকল্পের এক অদ্ভুত গীত-

এন্ডি ডুফ্রেইন এর চরিত্র এক নিখুঁত প্রতিরূপ—যিনি মৃদুভাষী, কিন্তু অটল সংকল্পের অধিকারী। তিনি কারাগারের প্রাচীরে বইয়ের লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন, সংগীত বাজান, অন্য বন্দিদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেন। এই সৌন্দর্যবোধ আর নৈতিক দৃঢ়তাই তাকে করে তোলে এক অন্তর্দর্শী রূপক পুরুষ—যার নীরবতা বহু কিছু বলে।

রেড হলেন সিনেমার আবেগী হৃদপিণ্ড। তার কণ্ঠ, অভিব্যক্তি, আর পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে ফুটে ওঠে আশা ও মুক্তির নতুন সংজ্ঞা। তিনি প্রথমে সংশয়প্রবণ, আত্মবিশ্বাসহীন, কিন্তু এন্ডির বন্ধুত্ব তাকে শিখিয়ে দেয় আশার শক্তি কতটা বিপুল হতে পারে।

জেল সুপারিনটেনডেন্ট স্যামুয়েল নরটন চরিত্রটি ভণ্ডামি ও ক্ষমতার দম্ভের প্রতীক। বাইবেলের মুখোশ পরে থেকেও তিনি অসৎ, নির্মম, এবং আত্মপরিত্রাণহীন এক চরিত্র। তার বিপরীতে হাদলি চরিত্রটি শারীরিক নির্যাতনের এক রূপ, যেখানে ক্ষমতা মানেই দমন। এই দুই চরিত্রই দর্শককে দেখিয়ে দেয়—কারাগারের আসল নিষ্ঠুরতা শুধুমাত্র প্রাচীরে নয়, বরং মনোভবনে।

দৃশ্য পরিকল্পনা ও চিত্রভাষা: ক্যানভাসে আলোছায়ার জাদু-

চিত্রগ্রাহক রজার ডিকিন্সের ক্যামেরা যেন জীবন্ত কবিতা—প্রতিটি দৃশ্য ভাষাহীনভাবে বলে দেয় বন্দিত্বের কষ্ট, নিঃসঙ্গতার ব্যথা এবং ছোট ছোট মুক্তির স্বাদ।

প্রিজনের লোহার গরাদ, দীর্ঘ করিডোর, ঢেউখেলানো ছায়া—সব মিলিয়ে এক অভ্যন্তরীণ বন্ধনের চিত্র। ক্যামেরার ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল শট বন্দিত্বের বিশালতাকে দেখায়, আবার ক্লোজ-আপ দৃশ্যে চরিত্রের অন্তর্জগৎ ফুটে ওঠে।

যখন এন্ডি মুক্তির পথে হাঁটে, বৃষ্টির মাঝে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়ায়—সেই বিখ্যাত ওভারহেড শটে তার আত্মার মুক্তি যেন আকাশ ছুঁয়ে ফেলে। সেই মুহূর্ত দর্শকের মনে এক কাব্যিক বিস্ফোরণ ঘটায়।


ক্যামেরা কোণ ও গতি: নিরব ভাষায় বলা গল্প

এন্ডি যখন ধীরে ধীরে জেলের ভিতর একটি নৈতিক উচ্চতায় উঠে যান—ওয়ার্ডেনের হিসেব রাখার কাজে সহায়তা করেন, কিংবা জেল লাইব্রেরি গড়ে তোলেন—তখন তাকে দেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে লো-অ্যাঙ্গেল শট, যেন তার ব্যক্তিত্ব ক্রমে বিশালতর হচ্ছে।

অন্যদিকে, বন্দিদের উপর ব্যবহৃত হাই-অ্যাঙ্গেল শট তাদের নিরুপায়তা, হীনমন্যতা ফুটিয়ে তোলে। ছাদে বিয়ার খাওয়ার দৃশ্যটি, যেখানে এন্ডি অন্যদের জন্য এক মুহূর্তের আনন্দ এনে দেয়, সেখানে ক্যামেরা ঘুরে ফিরে এক উষ্ণ, মানুষের গন্ধমাখা দৃশ্য নির্মাণ করে।


সঙ্গীত ও আবহ: এক নিঃশব্দ আত্মার সুর

থমাস নিউম্যানের সঙ্গীত যেন আত্মার গভীরে বাজে—কখনো করুণ, কখনো অলৌকিক। এটি দৃশ্যকে নয়, দর্শকের অনুভূতিকে স্পর্শ করে। এক মুহূর্ত আছে, যখন এন্ডি প্রিজনের পিএ সিস্টেমে মোৎসার্ট বাজান। বন্দিরা থমকে যায়, যেন ঈশ্বরের কণ্ঠ শুনছে।

সেই মুহূর্তে নেই কোনো সংলাপ—কেবল সঙ্গীত আর মুখাবয়ব—এবং দর্শক উপলব্ধি করে, সুন্দর কিছু কখনো কখনো শিকলও ভেঙে দিতে পারে।


প্রতীক ও রূপক: ‘আশা’ একটি জীবন্ত চরিত্র

চলচ্চিত্রজুড়ে প্রতীক যেন ছড়িয়ে আছে নীরব বর্ণমালার মতো। এন্ডির ক্ষুদ্র হাতুড়ি, যা ছোট এবং অকিঞ্চিৎকর বলে মনে হয়, সেটিই হয়ে ওঠে তার মুক্তির পথ। লাইব্রেরি, যা কেবল বইয়ের সংগ্রহ নয়, বরং আত্মিক মুক্তির পথ। আর রেডের পরিবর্তন—সেই ‘Institutionalization’ থেকে মুক্তির দিকে যাত্রা—একটি দর্শনীয় রূপান্তর।

শেষ দৃশ্যে সমুদ্রতীর, সূর্য, নীল আকাশ—সব মিলিয়ে এক নতুন ইডেনের সন্ধান, মুক্তির নতুন মানচিত্র।


উপসংহার: এক বিশ্বাসী চলচ্চিত্রের জয়গান

The Shawshank Redemption কেবল একটি চলচ্চিত্র নয়—এটি এক আত্মিক অভিজ্ঞতা। এটি আমাদের শেখায়, মুক্তি শুধু প্রাচীর পেরিয়ে নয়, হৃদয়ের মধ্য দিয়ে আসে।

বন্ধুত্ব, আশার দীপ্তি, আর সংকল্পের শক্তিই পারে সবচেয়ে অন্ধকার জায়গাকেও আলোয় রূপান্তর করতে।

শেষ দৃশ্যে সমুদ্রতীরে এন্ডি ও রেড-এর মিলন যেন এক নতুন পৃথিবীর প্রতীক—যেখানে নেই আর কোনো প্রাচীর, কেবল মুক্তির নীলাকাশ।

“Hope is a good thing, maybe the best of things, and no good thing ever dies.”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরণের অন্যান্য নিউজ