অনলাইন ডেস্ক
পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো ট্রাইব্যুনালে ব্যক্তিকেন্দ্রিক মামলা। এসব মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এবং অপরাধ সংঘটনে তাদের ভূমিকা তদন্ত করা হচ্ছে, যা আইনের ভাষায় ‘সুপেরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটি’ হিসেবে পরিচিত।
বুধবার দুপুরে ট্রাইব্যুনালে শুনানি শেষে সাংবাদিকদের তামীম আরও বলেন, এসব মামলা ছাড়াও জুলাই-আগস্টের ঘটনার বিভিন্ন স্থানের ওপর ভিত্তি করে কিছু মামলার তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আশুলিয়া, রামপুরা, চানখাঁরপুলসহ বেশ কয়েকটি স্থানের মামলা উল্লেখযোগ্য।
প্রসিকিউটর তামীম বলেন, সুপেরিয়র রেসপন্সিবিলিটির মামলায় যারা গ্রেফতার বা পলাতক রয়েছেন, তাদের অনেকেই এরই মধ্যে ঘটনাস্থলকেন্দ্রিক মামলাগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। আর যেসব মামলায় নৃশংসতা বেশি, সেগুলোয় আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এ কারণে অন্য মামলার তদন্ত কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। তবে এর মানে এ নয় যে মামলাগুলো থেমে আছে। প্রতিটি মামলার জন্য আলাদা তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে এবং তারা পৃথকভাবে তদন্ত করছেন।
শেখ হাসিনার মামলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হিসাবে তিনি জানান, শেখ হাসিনা সব অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু। তার নির্দেশেই সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চূড়ান্ত হলে সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। এ কারণে শেখ হাসিনার মামলা শেষ করে বাকিগুলো এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে, যা তদন্ত প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বুধবার শুনানির বিষয়ে প্রসিকিউটর তামীম বলেন, ট্রাইব্যুনালে আজ কয়েকটি মামলার তারিখ ছিল। জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় মহাখালীতে যে পাঁচজন শহিদ হন, সে ঘটনার নির্ধারিত তারিখ ছিল। এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে তিন মাস সময়ের আবেদন করা হয়েছিল। তা মঞ্জুর হয়ে ২০ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়।
প্রসিকিউটর তামীম জানান, অন্যদিকে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় মোহাম্মদপুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় অভিযুক্ত ওমর ফারুক নামে এক আনসার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়েছিল। অভিযোগ অনুযায়ী, ফারুক বিনা কারণে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আদালত ২৭ এপ্রিল তদন্ত সংস্থায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
এ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা যেসব ডকুমেন্ট সার্চ করে বা সিজ করতে পারে, সেগুলো যেন সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভেরিফায়েড করতে পারে- সেই আবেদন করা হয়েছিল। আদালত সেটি মঞ্জুর করেছেন।
Leave a Reply