হাকিকুল ইসলাম খোকন,
নিউইয়র্কে বাংলাদেশি পুলিশের ঘটনায় পুরো আমেরিকা সরগরম! আসলেই কী ঘটেছিল? সবাই হতবাক!
রোমান্টিক প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ভূয়া আইস এজেন্ট সেজে একজন নারীকে ভয় দেখানোর অভিযোগে নিউইয়র্ক পুলিশের (এনওয়াইপিডি) সার্জেন্ট আতিকুল ইসলামকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে ফেডারেল পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আতিক বাংলাদেশি আমেরিকান পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সদস্য বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এনওয়াইপিডি সার্জেন্ট আতিক অনলাইনে পরিচিত এক নারীর কাছ থেকে রোমান্টিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর প্রতিশোধ হিসেবে তিনি নিজেকে আইস এজেন্ট পরিচয় দিয়ে ভয় দেখিয়েছেন। ফেডারেল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে ১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার এই সংবাদটি প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক পোস্ট।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ব্রুকলিনের সার্ভিস এরিয়া-৩ এ কর্মরত সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম তার বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে বসবাস করেন। অনলাইনে এক নারীর সঙ্গে পরিচিত হন। সার্জেন্ট আতিক তাকে রোমান্টিক প্রস্তাব দিলে ওই নারী তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই প্রতিশোধমূলক আচরণ শুরু করেন আতিক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ডিউটির বাইরে থাকা অবস্থায় গত মার্চে তিনি ভুক্তভোগী নারীকে ফোন করে ও মেসেজে হুমকি দেন যে তিনি আইস পাঠিয়ে দেবেন তার কুইন্সের বাড়িতে। এ সময় তিনি নিজেকে আইস-এর ফিল্ড ডিরেক্টর পরিচয় দিয়ে দাবি করেন যে ওই নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৫ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটির আইস কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে হবে।
সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম অনলাইনে নিজের নাম ‘জেমস ডব্লিউ. অ্যান্ডারসন’ হিসেবেও ব্যবহার করতেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী এনওয়াইপিডির ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর কাছে অভিযোগ করেন। তদন্তে জানা যায়, সার্জেন্ট আতিকুল ইসলাম নিজেকে আইস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন, যা একটি গুরুতর ফেডারেল অপরাধ। এরপরই এনওয়াইপিডি বিষয়টি ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে জানায়।
ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের প্রকৃত অভিবাসন অবস্থা পরিষ্কার নয় বলে তদন্তে জানানো হয়েছে।
এদিকে, সার্জেন্ট আতিকুল ইসলামকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তা পরিচয়ে মিথ্যা পরিচয় দেওয়ার একটিমাত্র অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ১৮ নভেম্বর মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে ব্রুকলিন ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক ট্যারিন মার্কেলের আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বিচারক তাকে ২৫ হাজার ডলারের ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনে মুক্তি দেন।
সহকারী মার্কিন অ্যাটর্নি রেবেকা শুমান আদালতে বিচারকের কাছে অনুরোধ করায় আতিকুল ইসলামকে ভুক্তভোগীর বাড়ির আশেপাশেও যেতে নিষেধ করা হয়। বিচারক আতিকুল ইসলামকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেন।
সার্জেন্ট আতিকুল ইসলামের আইনজীবী জন আরলিয়া আদালতে জানান যে, এনওয়াইপিডি তার ব্যাজ ও সার্ভিস অস্ত্র জব্দ করেছে এবং তাকে বেতনসহ সাসপেন্ড করেছে।
আরলিয়া আরও বলেন, তার মক্কেল ‘এই অভিযোগগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সম্পূর্ণ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
আদালত থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে আতিকুল ইসলাম কেন আইস এজেন্ট পরিচয় দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
আদালতে হাজিরার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ৬ জানুয়ারি।
(সুত্রঃ ঠিকানা নিউইয়র্ক, ২০ নভেম্বর ২০২৫)
Leave a Reply