স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
চট্টগ্রাম মহানগরীতে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকারে প্রাণ হারালেন ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ ও নিরপরাধ ছাত্রলীগ কর্মী। জামাত-বিএনপির মব সন্ত্রাসীদের বেধড়ক মারধরের পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তরুণের নাম রাকিব (১৭)। তিনি চট্টগ্রাম মহানগরের ৯ নং ওয়ার্ডের বিশ্ব কলোনির বাসিন্দা এবং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। নিহত রাকিব তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে ৯ নং ওয়ার্ডের বিশ্ব কলোনি এলাকায় রাকিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বিএনপি জামায়াত শিবির মব সন্ত্রাসীদল। পরিবার ও দলীয় কর্মীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই নৃশংস হামলার নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয় বিএনপি ছেচরা নেতা হিসেবে পরিচিত ‘জুতা চোর’ লিটন এবং তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাকিবকে প্রথমে প্রকাশ্যেই নির্মমভাবে মারধর করা হয় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়।
জানা যায়, হামলাকারীরা মারধরের পর তাকে পুলিশেও সোপর্দ করে।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মৃত ঘোষণা করেন। ডাক্তাররা জানান, মাথায় ও শরীরের অন্যান্য স্থানে গুরুতর আঘাতের কারণেই রাকিবের মৃত্যু হয়েছে।
রাকিবের আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবারে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবা-মা বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন।
ওয়ার্ড ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, জামাত-বিএনপি জোটের সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের ধরে এই হামলা চালিয়েছে। ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতারা অবিলম্বে বিএনপি নেতা ‘জুতা চোর’ লিটন ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথেই গুরুতর আহত অবস্থায় রাকিবকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি মারা যান। নিহতের পরিবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছে এবং আমরা তা আমলে নিয়েছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
বর্তমানে রাকিবের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে নিলে ছেলেটি বেঁচে যেত, কিন্তু পুলিশ অবহেলা করেছে। পুলিশ বিএনপি জামায়াত শিবির সন্ত্রাসীদের খুশি করতে দ্রুত হাসপাতালে নেয় নি। এ মৃত্যুর জন্য পুলিশও দায়ী।
Leave a Reply