1. lifemedia766@gmail.com : admin : Badsah Deoan
  2. aglovelu99@gmail.com : Ag Lovelu : Ag Lovelu
  3. infocrime24@gmail.com : info crime24 : info crime24
  4. crimereport24@gmail.com : Crime Report : Crime Report
  5. musasirajofficial@gmail.com : Musa Asari : Musa Asari
  6. crime7775@gmail.com : Ariful Islam : Ariful Islam
  7. nurealomsah@gmail.com : Nure Alom Sah : Nure Alom Sah
আমার বাবা আমার প্রেরণা-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল - Crime Report 24
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন  চবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত : ১৫ নভেম্বর পুনর্মিলনী আয়োজনের সিদ্ধান্ত খায়ের মঞ্জিল দরবার শরিফ পরিচালনা কমিটি গঠিত : সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল মানিক ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর শেফায়েত হোসেন ইউরোপ-বাংলাদেশ ফেডারেশন অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উদ্বোধন সুনামগঞ্জে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রায় হাজাঁরো সনাতন ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের গৌরারং ও বিশ^ম্ভরপুরের ফতেপুর দুটি ইুইনয়নে দিনব্যাপী লিফলেট বিতরণ করেন এড. নুরুল ইসরাম নুরুল শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে জিডিএম ডিপার্টমেন্টের পোর্টফোলিও এবং এক্সিবিশন কোর্সের প্রদর্শনী শুরু। ময়মনসিংহ সিপিএসসি, র‌্যাব-১৪, কর্তৃক অভিযানে শিশু বলৎকার (ধর্ষণ) মামলার প্রধান আসামি গ্রেফতার চট্টগ্রামে ঝটিকা মিছিলের অভিযোগে ও মিথ্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার মাইজভাণ্ডারী মানব কল্যাণ সংস্থার নবগঠিত ৪র্থ কার্যকরী  পরিষদের অভিষেক  ও আলোচনা সভা

আমার বাবা আমার প্রেরণা-লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল

  • প্রকাশকাল: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

আমার বাবা মোঃ ইসমাইল হোসেন। তিনি শুধু আমার জন্মদাতা নন, আদর্শেরও প্রতীক। তিনি আমার প্রেরণা। ২০১৪ সালের ১২ আগষ্ট আমার বাবা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে আমার দাদার নামে প্রতিষ্ঠিত কাছম আলী ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল মাঠে ঐদিন বিকালে তাঁর নামাজে জানাযা শেষে টেপিরবাড়ি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। তখন আকাশ থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি নামছিল। মনে হয় বাবার শোকে বুঝি আকাশও কাঁদছিল। জানাযার নামাজে বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ প্রায় ৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লী উপস্থিত ছিলেন। ২০১৪ সালের ১৬ আগষ্ট কাছম আলী ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল মাঠে তাঁর কুলখানি অনুষ্ঠানেও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আমার বাবা ছিলেন নির্লোভ, নির্মোহ, নিরংহকার ও পরোপকারী। জীবনভর দিয়েছেন সবসময় উজাড় করে, নেননি কিছুই। হৃদয় দিয়েই ভালবাসতেন সুহৃদসহ ছোট-বড় সকলকেই। যে ভালবাসা ছিল নিখাদ, নির্ভেজাল, তার মধ্যে কোনদিন রাগ, ক্ষোভ, জেদ, বিরক্তি, অসহিষ্ণুতা, মুখভার- এগুলোর একটিও ছিল না। তার কথায় কেউ আহত হয়েছেন এমন নজির নাই। যেকোন কাজে তাঁর কাছে সহযোগিতা চেয়ে পাননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাবা হলেন আমার আদর্শ মানুষ। আমার কাছে আমার বাবা ভাল বুজুর্গ মানুষ বা তিনি ভাল পীর ছিলেন।তিনি আমার শক্তিরও উৎস। আমি আমার বাবাকে কাছ থেকে দেখেছি, নিকট থেকে জেনেছি। বাবার মুখে কখনো খারাপ কথা শুনিনি, বাবা কখনো কাউকে গালি দিতেন না। সিগারেট খেতেন না, দোকানে গিয়ে কখনও আড্ডা দিতেন না। বাবার কোন খারাপ বন্ধু ছিল না। বাবা কখনও খারাপ মানুষের সাথে ওঠাবসা করেননি। বাবা কারো সাথে কোনদিন খারাপ ব্যবহার করতেন না। আমার দৃষ্টিতে আমার বাবা হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা। তিনি ছিলেন ভাল অভিভাবক। আমার বাবা তার ভাইদের মধ্যে ছিলেন সবার বড়। তারা বাবাকে সম্মান করতেন, চাচারা আমার বাবাকে দাদা বলে সম্বোধন করতেন।বাবা মেট্টিক পাশ করার পর কিছুদিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তারপর তিনি সফলতা ও প্রশংসার সাথে ব্যবসা করেছেন। জীবনের শেষ অংশে তিনি নিজস্ব জোত-জমিতে কৃষিকাজ দেখাশুনা করতেন এবং আমাদের জমিতে যেসকল কৃষি শ্রমিক কাজ করতো তাদের কাছেও তিনি খুবই প্রিয় মানুষ ছিলেন। আমাদের বাড়িতে বার্ষিক হিসেবে নিয়মিত ৫/৬ জন লোক কাজ করতো তাদের পরিচালনা ও দেখাশোনাও তিনি করতেন। আমাদের গ্রামে সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান। সমাজের প্রধান হিসেবেও মৃত্যুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত আমার বাবা দায়িত্ব পালন করেছেন।আমাদের বাড়ির সামনে জামে মসজিদ, ফোরকানিয়া মাদরাসা, স্কুল প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থানের জন্য তিনি জমি দান করে গেছেন। তিনি একজন সমাজ সচেতন মানুষ ছিলেন। এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তিনি টেপিরবাড়ি কৃষক সমবায় সমিতি গড়ে তুলেছিলেন। এই সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হিসেবে তিনি এলাকার কৃষকদের সংগঠিত করেছিলেন। এই সমিতির মাধ্যমে এলাকার কৃষকগণ সহজশর্তে টাকা পেত এবং কিস্তির মাধ্যমে কৃষক তার দেনা পরিশোধ করতো। আমার বাবার নেতৃত্বে এই কৃষক সমবায় সমিতির মাধ্যমে সঞ্চয় সংগ্রহ করে পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন মোতাবেক কৃষকদের মধ্যে কৃষি সামগ্রী বিতরণ করা হতো। এতে অনেক দরিদ্র কৃষকও স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি নিজের ও এলাকার মানুষের জমিতে সেচের জন্য ১৯৮০ সালে নিজস্ব জমিতে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছিলেন। এই গভীর নলকূপ স্থাপনে ঐ সময় খরচ হয় প্রায় ১ লক্ষ টাকা। যার সিংহভাগ তিনি নিজেই প্রদান করেছেন।

তিনি একজন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ ছিলেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির চাহিদা মেটাতে তিনি ১৯৭৮ সালে আমাদের বাড়ীতে টিউবওয়েল স্থাপন করেছিলেন, এতে নিজের পরিবারের সদস্য ছাড়াও গ্রামের লোকজনদের পানীয়জলের সুব্যবস্থা হয়। তিনি সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ভালবাসতেন। তিনি একজন বৃক্ষ প্রেমিক মানুষ ছিলেন, প্রতি বছর বর্ষাকালে তিনি ফলজ, বনজ ও ভেষজ বৃক্ষের চারা রোপণ করতেন। রোপিত বৃক্ষের সংরক্ষণ ও পরিচর্যার বিষয়েও তিনি সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে তিনি আমাদের বাড়ীর চারপাশকে সবুজে শ্যামলে মনোরম পরিবেশে সাজিয়ে গেছেন। এলাকার অনেক দরিদ্র মানুষের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ তিনি গোপনে বা প্রকাশ্যে দিয়েছেন। ধর্মীয় শিক্ষা অর্থাৎ মাদ্রাসা ছাত্রদেরও তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন। এলাকার অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য তিনি সর্বদা কাজ করে গেছেন। কিন্তু তিনি ছিলেন প্রচার বিমুখ। তিনি দান করতে কৃপণ ছিলেন না। কিন্তু নিজ নাম প্রচারে তিনি বড়ই কৃপণ ছিলেন। আমার বাবা একজন ধৈর্য্যশীল মানুষ ছিলেন। তিনি কখনো হা-হুতাশ করতেন না। তিনি একমাত্র আল্লাহর সাহায্য চাইতেন। তিনি খুবই খোদাভীরু ও পরহেযগার মানুষ ছিলেন। তিনি ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামায়াতের সাথে পড়তেন।

৯২ বছর বয়সেও তাঁর দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি স্বাভাবিক ছিল। তিনি ধর্মীয় বইপত্র স্বাভাবিকভাবে পড়তেন। মসজিদে তালিমে তিনি কিতাব পড়তেন। দীর্ঘদনি তিনি আমাদের বাড়ির মসজিদে আযান দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি মোয়াজ্জিনের কাজও করেছেন। আমি দেখেছি আমার বাবা সর্বদা আল্লাহ তায়ালার জিকির করতেন। অসুস্থ্য অবস্থাতেও তিনি তাইয়্যুম করে নামাজ পড়েছেন এবং সারাক্ষণ আল্লাহ তায়ালার জিকিরে মশগুল ছিলেন। আমাদের কাছে তাঁর একমাত্র চাওয়া ছিল আমরা যেন মানবিক গুণাবলীসম্পন্ন ভাল মানুষ হই। আমার বাবা আর কখনো ফিরে আসবেন না। আসা সম্ভবও নয়। কিন্তু আমার বাবার একমাত্র চাওয়া আমরা যেন ভাল মানুষ হতে পারি।

সকলের কাছে দোয়া চাই আমরা যেন ভাল মানুষ হিসেবে মানবতার কল্যাণে কাজ করতে পারি। অসহায় মানুষের সহায়তায় যেন আমরা কাজ করে যেতে পারি। মহান আল্লাহ তায়ালা আমার বাবাকে যেন জান্নাতুল ফেরদৌস বেহেশত দান করেন, আমীন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরণের অন্যান্য নিউজ