নিজস্ব প্রতিবেদক
জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বগুড়ার আফাকু কোল্ড স্টোরেজের বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে সহযোগিতা না করায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র বড়গোলা শাখার ব্যবস্থাপক মো. তৌহিদ রেজাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে—এমন অভিযোগ উঠেছে। ব্যাংকের এসইভিপি ও মানবসম্পদ ও প্রশাসন (এইচআরএডি) বিভাগের প্রধানের স্বাক্ষরিত এক আদেশে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর ২০২৫) তাকে বরিশাল জোনাল অফিসে বদলি করা হয়। আদেশ অনুযায়ী, একই দিন অফিস সময় শেষে তাকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার, জুলাই গণহত্যার ৯ মামলার পলাতক আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরী সংশ্লিষ্ট বগুড়ার আফাকু কোল্ড স্টোরেজের নামে ইসলামী ব্যাংকের কাছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এই ঋণ অবৈধভাবে পুনঃতফসিলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছিল।

এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক কোল্ড স্টোরেজটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকের ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার, জাল বোর্ড রেজুলেশন এবং কৃত্রিম কাগজপত্র তৈরি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে জাতীয় ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সূত্রের দাবি, বড়গোলা শাখার ব্যবস্থাপক মো. তৌহিদ রেজা উক্ত ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও জালিয়াতির সঙ্গে একমত হননি। তিনি ব্যাংকিং আইন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা এবং প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসরণ করে ঋণ পুনঃতফসিলে আপত্তি জানান।
এতে প্রভাবশালী মহলের অসন্তোষের মুখে পড়েন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, অনিয়মে সহযোগিতা না করায় তাকে হঠাৎ করে শাখা থেকে সরিয়ে বরিশাল জোনাল অফিসে বদলি করা হয়েছে, যা ব্যাংক অঙ্গনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলে জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এখনো কার্যকর তদন্ত বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? বরং অনিয়মে আপস না করা একজন কর্মকর্তাকেই কেন দ্রুত শাখা থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো?
এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র বগুড়া জোনাল প্রধান সিকদার শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। হেড অফিসে যোগাযোগ করেন।” ঘটনাটি নিয়ে ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা, সুশাসন ও খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
Leave a Reply