1. lifemedia766@gmail.com : admin : Badsah Deoan
  2. aglovelu99@gmail.com : Ag Lovelu : Ag Lovelu
  3. infocrime24@gmail.com : info crime24 : info crime24
  4. crimereport24@gmail.com : Crime Report : Crime Report
  5. mehedyhasan321m@gmail.com : Mehedy Hasan : Mehedy Hasan
  6. musasirajofficial@gmail.com : Musa Asari : Musa Asari
  7. crime7775@gmail.com : Ariful Islam : Ariful Islam
  8. nurealomsah@gmail.com : Nure Alom Sah : Nure Alom Sah
বিগ অ্যাপল কার? ক্যুমো নাকি মামদানির - Crime Report 24
রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বিগ অ্যাপল কার? ক্যুমো নাকি মামদানির ডিস্ট্রিক্ট-২৫,কাউন্সিলম্যান পদে লড়ছেন শাহ শহীদুল হক সাঈদ অ্যাসেম্বলিম্যান পদপ্রার্থী সিপিএ জাকির চৌধুরী CLUB 94 BD এর উদ্যোগে ১৯৯৪ সালের এসএসসি পাস প্রয়াত বন্ধুদের স্মরণে দোয়া, মিলাদ মাহাফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠিত আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভাণ্ডারীর চট্টগ্রাম ‘ক’ জোনের সাংগঠনিক মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত তাজকিয়া কেন্দ্রীয় পরিষদের সাংগঠনিক সংলাপ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সাইনিং সিতোরিউ কারাতে এসোসিয়েশনের ৩৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান ফুলবাড়িতে বিএনপির দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত প্রকাশ্যে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ কুমিল্লায় দোয়া ও ফিতা কেটে ‘ইউনিটি স্টাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার’স লিমিটেড’ এর অফিস উদ্বোধন কালিয়াকৈরে ৫৪ তম সমবায় দিবস পালিত

বিগ অ্যাপল কার? ক্যুমো নাকি মামদানির

  • প্রকাশকাল: রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫

হাকিকুল ইসলাম খোকন,
বিগ অ্যাপেল-খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এখন চূড়ান্ত প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রধান তিন মেয়রপ্রার্থী- জোহরান মামদানি, অ্যান্ড্রু ক্যুমো ও কার্টিস স্লিওয়া। সর্বশক্তি দিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মরণকামড় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী মামদানি জনমত জরিপে এগিয়ে থাকলেও তাকে পরাস্ত করতে মারিয়া হয়ে উঠেছেন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো। অনেকটা সফলও হচ্ছেন তিনি।খবর আইবিএননিউজ।
এরই মধ্যে গত ২২ অক্টোবর রুদ্ধশ্বাস নাটকের মতো হয়ে গেলো প্রার্থীদের শেষ সরাসরি বিতর্ক।
একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টা-পাল্টি আক্রমণে সরগরম ছিল মঞ্চ, যা এই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে করেছে আরো প্রাণবন্ত।
স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি ভোটে প্রাইমারিতে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট দলীয়প্রার্থী মামদানি এগিয়ে গেছেন অনেকটা ম্যাজিকের মতো। খোদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘মামদানিকে সম্ভবত আর থামানো যাচ্ছে না।’ ঘাত-প্রতিঘাতে জর্জরিত সাবেক গভর্নর ও স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু ক্যুমো জরিপে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও প্রভাবশালী মহল তাকে সবধরনের সমর্থন ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে। প্রচারে পিছিয়ে নেই রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াও। সব মিলিয়ে এবারের নির্বাচন ভোটারদের মধ্যে নতুন গণজাগরণ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তরুণ ভোটাররা এবার মাঠে নেমেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূলুকে অভূতপূর্ব। এ যেন এক নতুন ইতিহাস। আগাম ভোটেও মিলছে ব্যাপক সাড়া।
বিশ্লেষকরা আভাস দিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি ভোট পড়বে। নানা বৈচিত্র্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এ নির্বাচন ইতিহাস হয়ে থাকবে।
মামদানি ও ক্যুমোর মধ্যে লড়াই এক নতুন প্রজন্মের চিন্তা ও পুরনো অভিজ্ঞতার সংঘাত। আগামী মংগলবার ,৪ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোট গ্রহণের পর স্পষ্ট হবে ‘বিগ অ্যাপেল, তুমি কার? ক্যুমো, নাকি মামদানির?’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি শেষ মুহূর্তে কোনো অঘটন না ঘটে, তবে মামদানিই হতে যাচ্ছেন নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র- যা আমেরিকার রাজনীতিতে হবে এক বড় প্রতীকী মাইলফলক।

বিতর্কে কে সেরা : ২২ অক্টোবর বুধবার। আলো-ঝলমলে মঞ্চে হাজির তিন প্রধান মেয়রপ্রার্থী। ক্রমবর্ধমান বাড়িভাড়া, যানজট, পরিবহণ ভাড়া ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন- এই সবকিছু নিয়েই শুরু হয় তীব্র আলোচনা। চূড়ান্ত বিতর্কে ক্যুমো ও স্লিওয়া একজোট হয়ে মামদানিকে আক্রমণ করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, মামদানি অপ্রস্তুত, অভিজ্ঞতাহীন এবং নিউইয়র্কের জটিল বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবেন না। বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাঁর মন্তব্য নিয়ে স্লিওয়া ও ক্যুমো একযোগে প্রশ্নবাণ ছোঁড়েন।
তবে পুরো বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে একটি মুহূর্ত- যখন ক্যুমো হঠাৎ মামদানিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি যদি মেয়র হন, তাহলে ট্রাম্প আপনাকে এমনভাবে চেপে ধরবেন যে, সামলাতে পারবেন না।’
মামদানি তৎক্ষণাৎ পাল্টা জবাবে ক্যুমোর অতীতের যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘জনগণ সততা ও নৈতিকতার রাজনীতি চায়, অতীতের ছায়ায় ঢাকা নেতৃত্ব নয়।’
তিনি বলেন, ‘ক্যুমো আসলে ট্রাম্পের পুতুল, যিনি নিজের রাজনৈতিক অতীত দিয়ে এই শহরের বিশ্বাস হারিয়েছেন।’
অন্যদিকে কার্টিস স্লিওয়া বলেন, ‘শহর ও ফেডারেল সরকারের মধ্যে সম্পর্ক অতিরিক্ত টানাপোড়েনে গেলে সাধারণ মানুষই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তাঁর মতে, নেতৃত্বে সংযম ও কূটনীতি থাকা জরুরি।
উত্তেজনায় ভরে ওঠে মঞ্চ। নানা বিষয়ে তুমুল বিতর্ক চলে দীর্ঘক্ষণ।
বিশ্লেষকদের মতে, মামদানির চোয়ালে ছিল দৃঢ়তা ও লড়াকু ভঙ্গি। ক্যুমোর মধ্যে দেখা যায় কিছুটা ক্লান্তি, আর স্লিওয়া ছিলেন তুলনামূলক শান্ত ও স্থির।

সর্বশেষ জরিপে যা দেখা যাচ্ছে : গত সেপ্টেম্বরে সাফোক বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে যে ফলাফল এসেছিলো ক্যুমো সদ্য জরিপে মামদানির লিড প্রায় অর্ধেক কমিয়ে এনেছেন। জরিপে ক্যুমো ২৫%, মামদানি ৪৫%, স্লিওয়া ৯% এবং মেয়র এরিক অ্যাডামস ৮% সমর্থন পেয়েছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর সোমবার হয় তাদের আরেকটি জরিপ।
এই জরিপে দেখা গেছে ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট সোস্যালিস্ট মামদানি পেয়েছেন ৪৪% সমর্থন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যুমো ৩৪% পেয়ে দ্বিতীয় এবং রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া ১১% ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রায় ৭% ভোটার এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন। ২৩-২৬ অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত ৫০০ সম্ভাব্য সাধারণ নির্বাচনের ভোটারদের উপর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়।
এদিকে বোর্ড অব ইলেকশন নিউইয়র্ক সিটি আনঅফিসিয়াল সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ দিনে সিটিতে ভোট পড়েছে ২ লাখ ৯৭ হাজার ৭১৭ টি। তারমধ্যে প্রথমদিনে ৭৯ হাজার ৪০৯টি, দ্বিতীয় দিনে ৮৪ হাজার ৭৮১টি, তৃতীয় দিনে ৫৯ হাজার ০৭৮ এবং চতুর্থ দিনে ৭৪,৪৫০টি ভোট প্রদান করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ব্রুকলিন ৯২,০৩৫; এরপর ম্যানহাটন ৮৯,৪৭৪, কুইন্সে ৬৮,৮৭৩, ব্রঙ্কসে ২৪,৯১৯ এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে ২২,৪১৭ ভোট।
এই নির্বাচনের গুরুত্ব নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে জাতীয় রাজনীতিতেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আমেরিকার বৃহত্তম সিটির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব এবার নির্ধারণ করবে কেবল স্থানীয় নীতিই নয়Ñ বরং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অভ্যন্তরীণ প্রজন্মগত ও আদর্শিক বিভাজনের দিকনির্দেশনাও।
মামদানির নেতৃত্বে প্রগতিশীল ধারা স্পষ্টতই শক্তিশালী হয়েছে, যেখানে পরিবহণ ভাড়া ফ্রি, সরকারি মালিকানাধীন গ্রোসারি এবং শহরের ব্যয়সঙ্কট মোকাবিলায় সামাজিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি তাঁকে তরুণ ও মধ্যবিত্ত ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
বিভিন্ন সমীক্ষার ফলাফল দেখাচ্ছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে মামদানি ধারাবাহিকভাবে ৪০ থেকে ৪৬ শতাংশ ভোট ধরে রেখেছেন।
জনমিতি বিশ্লেষণ বলছে, মামদানির সবচেয়ে দৃঢ় সমর্থন তরুণ, প্রবাসী ও প্রগতিশীল ভোটারদের মধ্যে। ৩০ বছরের নিচের ভোটারদের মধ্যে তাঁর সমর্থন ৬৭%, নারী ভোটারদের মধ্যে ৪৯%, আর বিদেশে জন্ম নেওয়া নিউইয়র্কারদের মধ্যে ৬২%।
তিনি মুসলিম, হিন্দু ও নিরীশ্বরবাদী ভোটারদের কাছেও শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন।
অন্যদিকে ক্যুমো তুলনামূলকভাবে বয়স্ক ও মধ্যপন্থী ভোটারদের বেশি আকৃষ্ট করছেন। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ভোটারদের মধ্যে তাঁর সমর্থন ৪৪%। ইহুদি ভোটারদের মধ্যে ক্যুমো সামান্য এগিয়ে, ৪২ বনাম ৩৮ শতাংশে।
কার্টিস স্লিওয়া রিপাবলিকান ও ট্রাম্প সমর্থকদের কাছেই সীমাবদ্ধ রয়েছেন- যেখানে তাঁর সমর্থন প্রায় ৬০ শতাংশ। তবে সামগ্রিকভাবে ভোটের অঙ্কে তিনি এখনো অনেক পিছিয়ে।
মেয়র এরিক অ্যাডামস প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তাঁর সমর্থকদের বড় অংশই ক্যুমোর দিকে ঝুঁকেছেন, কিন্তু মামদানি এখনো ১০ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে।
কুইনিপিয়াকের সহকারী পরিচালক মেরি স্নোর ভাষায়, ‘অ্যাডামসের ভোট ক্যুমোর দিকে গেলেও মামদানির নেতৃত্ব এখনো অটুট।’

‘স্টপ মামদানি’ আন্দোলন ক্যুমোকে বাঁচাতে পারছে না : অ্যান্ড্রু ক্যুমো এখন ‘স্টপ মামদানি’ শিবিরের মুখপাত্র। প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানো ও বিতর্কিত মেয়র এরিক অ্যাডামসও তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। গত সপ্তাহে ক্যুমো ও অ্যাডামস একসঙ্গে হাজির হন ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে নির্বাচনী প্রচারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাডামসের সমর্থনে ক্যুমো তেমন একটা ভোট টানতে পারবেন না। তবে এটি হয়তো আফ্রিকান-আমেরিকান এবং ইহুদি ভোটারদের একটি অংশে সামান্য প্রভাব ফেলতে পারে।
নিউইয়র্কের রাজনীতি এমনিতেই এক জটিল খেলার বোর্ড- যেখানে জোট ও বিরোধ, জাতিগত প্রভাব এবং মিডিয়ার আলো- সবকিছু একাকার হয়ে যায়।
৩৪ বছর বয়সী এই অ্যাসেম্বলিম্যান, যিনি শুরুতে জরিপে ছিলেন মাত্র ১ শতাংশে, এখন শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী!

ক্যুমোর শেষ চেষ্টা : অ্যান্ড্রু ক্যুমো, যিনি চার বছর আগে যৌন হয়রানির অভিযোগে গভর্নরের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, এখন সেই অতীত থেকে মুক্তি পেতে মরিয়া। তিনি নিজেকে ‘অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত প্রশাসক’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন এবং রিপাবলিকান ভোটারদের আকৃষ্ট করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।
এদিকে বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামসও তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। অ্যাডামসের এন্ডোর্সমেন্ট ক্যুমোকে কিছুটা নৈতিক সমর্থন দিলেও বিশ্লেষকদের মতে, তাতে ভোটের সমীকরণে খুব একটা বড় পরিবর্তন আসবে না।

রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়ার অবস্থান : কার্টিস স্লিওয়া নিউইয়র্কের ‘গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলস’ সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি তাঁর প্রচারণায় মূলত আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধ দমনকে সামনে রেখেছেন। তবে ডেমোক্র্যাট-প্রধান শহরে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও তিনি ক্যুমোর সঙ্গে একজোট হয়ে মামদানির নীতিকে ‘বিপজ্জনকভাবে বামঘেঁষা’ বলে সমালোচনা করেছেন।

সমাবেশে মামদানির শক্তি প্রদর্শন : গত ২৬ অক্টোবর কুইন্সের ফরেস্ট হিলস স্টেডিয়াম মামদানির নির্বাচনী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন তিনজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাটিক নেতা- নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল, কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ (এওসি) এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স।
গভর্নর হোকুল হাসিমুখে হাত উঁচিয়ে মামদানির সঙ্গে ঐক্য প্রদর্শন করেন।
সমাবেশে ওকাসিও-কর্টেজ বলেন, ‘আমরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জোরালো বার্তা দেবো- নিউইয়র্কে স্বৈরাচারের কোনো স্থান নেই।’
সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘নিউইয়র্কে মামদানির জয় শুধু একটি শহরের নয়, এটি হবে গোটা দেশের মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক।’
মামদানির নাম উচ্চারণে তালগোল : নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, মামদানিরনামটির উচ্চারণে শত্রু-মিত্র, সবারই ভুল হচ্ছে। এ নিয়ে জোহরান মামদানি বলেন, ‘সত্যি বলতে, এটা উচ্চারণ করা মোটামুটি সহজই।’
গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ত্রিপক্ষীয় বিতর্কে এক ঘণ্টার বেশি সময় কেটে যায়। তবু সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো এ নির্বাচনের প্রধান প্রার্থীর নামই ঠিকভাবে বলতে পারেননি।
ক্যুমো মামদানিকে ডাকলেন ‘অ্যাসেম্বলিম্যান’ এবং সাবেক মেয়র বিল ডি ব্লাসিওর একটি ‘ছোট সংস্করণ’ হিসেবে। এভাবে তিনি কৌশলে মামদানির নামটি উচ্চারণ করা এড়িয়ে যান। যদিও নির্বাচনী প্রচারে তিনি বারবার নামটি ভুল বলেছিলেন।
‘মিস্টার মানদানি’। ক্যুমোর একটি নির্বাচনী প্রচারের ভিডিওতে এভাবেই মামদানির নামের উচ্চারণ করতে শোনা যায়। আর গত জুনে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারির বিতর্ক মঞ্চে ক্যুমোকে বলতে শোনা যায়, ‘মি. মানদামি’। ক্যুমোর উচ্চারণ এতটাই ভুল ছিল যে, মামদানি নিজেই তাঁকে তা ঠিক করতে বলেন- M-A-M-D-A-N-I.
মামদানির নামের উচ্চারণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ক্যুমোই শুধু নন, অনেকেই ভুল করছেন। বিভিন্ন কারণেই তা হচ্ছে। এর কিছু বৈধ ও কিছু সম্ভবত অযৌক্তিক। মামদানির নামের শুধু প্রথম অংশই নয়; শেষ অংশও হয়ে উঠেছে ভাষাগত ভুলের রোমাঞ্চকর ও সৃষ্টিশীল প্রদর্শনের বিষয় হিসেবে।
গত সপ্তাহে নিউইয়র্কের প্রথম বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া মামদানির নাম বলার চেষ্টা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন এবং তাঁকে ডাকলেন ‘জোর-হান’। ‘জোরহান মানদামি’।

ক্যুমোর ইসলামবিরোধী মন্তব্যে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া মামদানির : জোহরান মামদানি গত ২৪ অক্টোবর ব্রঙ্কসের এক মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে নিজের বিশ্বাসের পক্ষে কথা বলেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু ক্যুমোর ইসলামবিরোধী মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি কে, কীভাবে খাই, কিংবা কোন ধর্মে বিশ্বাস করি- এগুলো পরিবর্তন করব না। আমি গর্বিত মুসলিম এবং সেই পরিচয় লুকিয়ে নয়, মাথা উঁচু করেই চলব।’
এই বক্তব্যের সময় মামদানির পাশে ছিলেন বহু সমর্থক, যাদের মধ্যে হিজাব পরা নারীরাও ছিলেন।
তিনি আবেগভরে বলেন, ‘আমি সেই ফুপির কথা বলতে চাই, যিনি ৯/১১ হামলার পর আর সাবওয়েতে উঠতেন না, কারণ হিজাব পরে নিজেকে নিরাপদ মনে করতেন না।’
মামদানি আরো বলেন, ‘আমি আজ কথা বলতে চাই সেই মুসলিম কর্মীর হয়ে, যিনি আমাদের স্কুলে পড়ান, কিংবা এনওয়াইপিডিতে দায়িত্ব পালন করেন।’
বিতর্কের সূত্রপাত একদিন আগে, যখন ক্যুমো এক রেডিও সাক্ষাৎকারে সঞ্চালকের উস্কানিমূলক মন্তব্যে হেসে ফেলেন।
সঞ্চালক সিড রোজেনবার্গ বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর না করুন, যদি আবার কোনো ৯/১১ ঘটে, কল্পনা করুন মামদানি মেয়রের চেয়ারে বসে আছেন!’- এ সময় রোজেনবার্গ মন্তব্য করেন, ‘সে তো উল্লাস করবে।’
তখন ক্যুমো হেসে বলেন, ‘এই তো আরেকটা সমস্যা।’ এই মন্তব্যকে ঘিরেই ক্ষোভ ছড়ায়।
মামদানি বলেন, ‘যখন আমার বিশ্বাসকে উপহাস করা হয়, তখন শুধু আমি নয়- নিউইয়র্কের প্রতিটি মুসলিম অপমানিত হয়।’
বক্তৃতার সময় তাঁর চোখ ভিজে ওঠে, আর ভিড় থেকে ‘স্ট্যান্ড উইথ মামদানি’ স্লোগান ওঠে।

সহস্রাধিক মার্কিন রাব্বির চিঠি : যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এক হাজারেরও বেশি রাব্বি একটি যৌথ চিঠিতে ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব ও বেড়ে ওঠা ইহুদিবিদ্বেষ (অ্যান্টিসেমিটিজম) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে তারা মামদানির নাম সরাসরি উল্লেখ করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন রাজনীতিতে ‘অ্যান্টি-জায়নিস্ট’ অবস্থানকে স্বাভাবিক করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সহনশীলতার সংস্কৃতির জন্য হুমকি।
এই চিঠিতে সই করা রাব্বিদের মতে, নির্বাচনী রাজনীতিতে যারা ইসরায়েলবিরোধী বক্তব্যকে বৈধতা দিচ্ছেন, তাদের অবস্থান গভীরভাবে উদ্বেগজনক।

নিউইয়র্ক সিটিতে নিবন্ধিত ভোটার ৫১ লাখ: ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটিতে নিবন্ধিত মোট ভোটার প্রায় ৫১ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪৭ লাখ। সিটি ক্যাম্পেইন ফাইন্যান্স বোর্ডের তথ্যমতে, এ সংখ্যা নিউইয়র্কের মোট যোগ্য ভোটারের প্রায় ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
২০২৫ সালের প্রাইমারি নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার নিবন্ধনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটে। জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজার পর্যন্ত নতুন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন।
আমেরিকান-ইসলামিক সম্পর্ক কাউন্সিল (ঈঅওজ)-এর সর্বশেষ তথ্যমতে, নিউইয়র্ক সিটিতে বর্তমানে ৩ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মুসলিম নিবন্ধিত ভোটার আছেন। শহরের মোট মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ, যার মধ্যে নাগরিকত্ব ও বয়সের শর্ত পূরণকারীরাই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
আগে তুলনামূলকভাবে মুসলিম ভোটারদের অংশগ্রহণ কম থাকলেও ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৫ সালের মেয়র প্রাইমারিতে তা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মুসলিম ভোটারদের এই উত্থান নিউইয়র্কের স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন ভারসাম্য তৈরি করছে।
নিউইয়র্ক সিটির প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৪৮ শতাংশ খ্রিস্টান, ৯ শতাংশ মুসলিম, এবং প্রায় ২৫ শতাংশ ধর্মীয়ভাবে অনাগ্রহী বা ‘নন-রিলিজিয়াস’। এছাড়া ইহুদি, হিন্দু ও বৌদ্ধসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মিলিয়ে প্রায় ৬ শতাংশ বাসিন্দা শহরের ধর্মীয় বৈচিত্র্যের অংশ।

মেয়র পদ ছাড়াও যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন : নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু ক্যুমো এবং রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসাবে রয়েছেন কার্টিস ডি সিলভা। তবে এরিক অ্যাডামস নির্বাচনে না থাকলেও এবং সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তার নাম ব্যালটে রয়ে গেছে।
পাবলিক অ্যাডভোকেট পদে নির্বাচন করছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী জুমানি ডি উইলিয়ামস, রিপাবলিকান প্রার্থী গনজালো ডুরান।
সিটি কম্পট্রোলার পদে নির্বাচন করছেন বেশ কয়েকজন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী মার্ক ডি লিভেইন ও রিপাবলিকান প্রার্থী পিটার কেফালাস।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নির্বাচন করতে একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। পাঁচজনকে বিচারক নির্বাচন করতে হবে।
এছাড়াও নিউইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি, নিউইয়র্ক ডিস্ট্রিক্ট প্রেসিডেন্টসহ সিটি কাউন্সিলের বিভিন্ন ডিস্ট্রিক্টে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
১০টি সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট নির্বাচনও হচ্ছে। নিউইয়র্ক সিটির মিনিসিপ্যাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সিভিল কোর্টের জজ পদে নির্বাচন হবে বেশ কয়েকটি ডিস্ট্রিক্টে। এছড়াও ছয়টি প্রপোজাল রয়েছে সেই প্রপোজালের মধ্য হ্যাঁ অথবা না ভোট দিতে হবে।
আগামী ৪ নভেম্বর সাধারণ নির্বাচনের জন্য অনলাইনে বা ডাকযোগে আবেদন করার শেষ দিন ছিল গত ২৫ অক্টোবর। ভোটারের কাউন্টি নির্বাচন বোর্ডে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করার শেষ দিন ৩ নভেম্বর। ব্যালটটি ৪ নভেম্বরের মধ্যে পোস্টমার্ক পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাকযোগে জমা দিতে হবে। ৪ নভেম্বর রাত ৯টার মধ্যে ভোটারের নিজ নিজ কাউন্টি নির্বাচন বোর্ড অফিসে ব্যালট জমা দিতে হবে।
অ্যাবসেন্টি ব্যালটে ভোট এর জন্য ২৫ অক্টোবর শুরু হয়েছে। ২ নভেম্বরের মধ্যে আপনার কাউন্টির একটি প্রাথমিক ভোটদান কেন্দ্রে ব্যালট জমা দিতে পারবেন। ৪ নভেম্বর রাত ৯টার মধ্যে নির্বাচনের দিনের ভোট কেন্দ্রে আপনার ব্যালট জমা দিতে হবে।
সাধারণ নির্বাচন : ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৫। ভোটগ্রহণ করা হবে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
নির্বাচিত প্রার্থী বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ২০২৬ সালের শুরুতে দায়িত্ব নেবেন।
বিদেশি দাতার অর্থ গ্রহণের অভিযোগে জোহরান মামদানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানি ২৮ অক্টোবর এক বড় বিতর্কে জড়িয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি দাতাদের কাছ থেকে অবৈধ অনুদান গ্রহণের অভিযোগে মার্কিন বিচার বিভাগ (উঙঔ) ও ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নির অফিসে ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ দাখিল করা হয়েছে।
এই অভিযোগ দায়ের করেছে কুলিজ রিগান ফাউন্ডেশন, একটি নির্বাচনী তহবিল পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা। তারা জানিয়েছে, মামদানি ফেডারেল নির্বাচন প্রচার আইন (ঋবফবৎধষ ঊষবপঃরড়হ ঈধসঢ়ধরমহ অপঃ) এবং নিউইয়র্ক রাজ্যের নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মামদানির প্রচার তহবিলে অন্তত ১৭০ জন বিদেশি ঠিকানা-ধারী দাতার কাছ থেকে মোট প্রায় ১৩,০০০ ডলার অনুদান এসেছে। এদের মধ্যে একজন দাতা হলেন তার শ্বাশুড়ি, যিনি দুবাইয়ে বসবাস করেন।
এই তথ্য প্রথম প্রকাশ করে নিউইয়র্ক পোস্ট, যার পর ফাউন্ডেশনটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার বিভাগ ও ম্যানহাটন ডিএ অ্যালভিন ব্র্যাগের অফিসে তদন্তের অনুরোধ পাঠায়।
মামদানির প্রচারণা টিম এখনো পর্যন্ত এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তাদের বিশ্বাস এই অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ঘটনাটি ভোটের মাত্র এক সপ্তাহ আগে মামদানির প্রচারে চাপ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যখন সাম্প্রতিক জনমত জরিপে তার লিড কমে এসেছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু ক‍্যুমো গতি পাচ্ছেন।
এদিকে কুলিজ রিগান ফাউন্ডেশন দাবি করেছে, “বিদেশি অর্থ অনুদান গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী একটি গুরুতর অপরাধ। এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হলেও প্রমাণের অভাবে তা কতটা কার্যকর হবে—তা এখনো অনিশ্চিত।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরণের অন্যান্য নিউজ