হাকিকুল ইসলাম খোকন, বাপসনিউজঃ বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক সময় মুক্তবুদ্ধির বিকাশ, বিজ্ঞানমনস্কতা ও মানবিক চেতনার দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। অথচ আজ সেই দুর্গে প্রবেশ করছে চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্রবাদী মতাদর্শের বাহকরা। সর্বশেষ উদাহরণ নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরির-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) যন্ত্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাকসুদ হেলালী-কে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ড.মোল্লাহ ও বে-জন্মা মোহাম্মদ ইউনুস সরকার।খবর আইবিএননিউজ।
মাকসুদ হেলালী সাত বছর আগে অবসরে গেছেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের পুনর্নিয়োগে তাত্ত্বিকভাবে আপত্তি না থাকলেও, যিনি অতীতে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন তাকে দেশের একটি শীর্ষ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান করে বসানো শুধুমাত্র প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক বার্তা। সেই বার্তা স্পষ্ট শিক্ষাঙ্গন দখল করতে চায় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, এবং ড.মোল্লাহ ওবে-জন্মা মোহাম্মদ ইউনুস সরকার তাদের পথ প্রশস্ত করছে।
হিজবুত তাহরির বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এবং বিশ্ব ব্যপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষিত। তাদের লক্ষ্য হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উৎখাত করে খিলাফত কায়েম করা। এই সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তি কিভাবে দেশের প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার দিকনির্দেশনা দিবে এ প্রশ্ন শুধু শিক্ষাবিদদের নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের।
এই নিয়োগ প্রমাণ করে, বর্তমান জংগী সরকারের নীতি হলো উগ্রবাদী ও স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীকে পুনর্বাসন। অতীতে এই ধরনের নিয়োগের ফল ভয়াবহ হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা, ছাত্র-শিক্ষক আতঙ্ক, গবেষণার মান পতন এবং দেশজুড়ে চরমপন্থী চিন্তার বিস্তার।
আজ যদি আমরা নীরব থাকি, কাল দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের হাতে বইয়ের পরিবর্তে উগ্রবাদী লিফলেট তুলে দেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বদলে প্রতিধ্বনিত হবে অন্ধকারের আহ্বান।
শিক্ষাঙ্গন মুক্তি আন্দোলন এখন সময় এসেছে এই শ্লোগান নতুন করে উচ্চারণ করার। যে শক্তি ১৯৭১-এ পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর ছিল, এবং আজ জঙ্গি মতাদর্শের পুনর্জন্ম ঘটাতে চায় তাদের স্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের চেয়ারে নয়, আইনের কাঠগড়ায়।
Leave a Reply