সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ বাদশাহ দেওয়ান
মাদক ক্রমেই এক ভয়ংকর সামাজিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠছে। দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স রয়েছে। লাগাতার অভিযান হচ্ছে, কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না। মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না।
ক্রমেই বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। শহর শুধু নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও এখন মাদক সহজলভ্য। বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থার (মানস) হিসাব মতে, দেশে এখন মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি।
প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মাদকের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা।
গত দুই বছরে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। একই সময়ে কিশোর গ্যাংয়ের হার বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। শুধু সংখ্যাগত দিক থেকে নয়, বরং বদলে গেছে তাদের অপরাধের ধরন, প্রকৃতিও।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মাদক সহজলভ্য হওয়ায় কিশোররা ক্রমেই বেশি করে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
এরপর মাদক ক্রয়ের অর্থ সংগ্রহের জন্য জড়িয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের অপরাধে। অনেক সময় অর্থের জন্য বিভিন্ন অপরাধীচক্রের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। অনেকে তাদের ভাড়ায় খাটাচ্ছে। ফলে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। নিজেরা নিজেরা কিংবা ‘বড় ভাইদের’ আশ্রয়ে গড়ে তুলছে ‘কিশোর গ্যাং’।
সারা দেশেই সাধারণ মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে কিশোর গ্যাং। খুন, ডাকাতি থেকে এমন কোনো অপরাধ নেই, যার সঙ্গে এরা জড়িত নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, মাদক ব্যবসার স্পট পরিচালনাসহ খুচরা পর্যায়ে মাদক বিক্রিতে ব্যাপকহারে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আরো খারাপ বার্তাই দেয় আমাদের।
অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ জানিয়েছে, রংপুর নগরীসহ জেলায় কিশোর অপরাধে জড়িতদের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। প্রায় একই অবস্থা অন্যান্য স্থানেও।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী মাদকদ্রব্য পরিবহন, কেনাবেচা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, অর্থ লগ্নীকরণ, পৃষ্ঠপোষকতাসহ বিভিন্ন অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড। এত কঠোর আইন সত্ত্বেও মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না।
মাদকের ভয়ংকর থাবা থেকে দেশ বাঁচাতে মাদকের সহজলভ্যতা দূর করতে হবে। দেশে মাদক প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাদকসংক্রান্ত মামলাগুলোর বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
Leave a Reply