1. lifemedia766@gmail.com : admin : Badsah Deoan
  2. aglovelu99@gmail.com : Ag Lovelu : Ag Lovelu
  3. infocrime24@gmail.com : info crime24 : info crime24
  4. crimereport24@gmail.com : Crime Report : Crime Report
  5. musasirajofficial@gmail.com : Musa Asari : Musa Asari
  6. crime7775@gmail.com : Ariful Islam : Ariful Islam
  7. nurealomsah@gmail.com : Nure Alom Sah : Nure Alom Sah
২৩ বছর ধরে কারাগারে ফিলিস্তিনের ‘নেলসন মেন্ডেলা’ - Crime Report 24
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
রাজাকার দল কর্তৃক ডাঃ জাহেদুর রহমানকে হত্যার হুমকি ও নাস্তিক অপবাদ দেয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ রাউজানে হাজী মফিজুর রহমান ফাউন্ডেশনের দুই দিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পন্ন ⁨বাংলার লালনকন্যা ফরিদা পারভীনের বিদায়ে জাতি শোকে স্তব্ধ — সুরহীন নীরবতায় কাঁদছে পুরো বাংলার আকাশ-বাতাস জাকসু নির্বাচনে ২৫ পদে জয়ী হলেন যারা ভোলাহাট উপজেলা প্রশাসনের গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের বিজয়ী খেলোয়াড়দের ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ! কালিয়াকৈরে বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ সূর্যগিরি আশ্রম শাখার মহিলা কমিটির উদ্যোগে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত ফরহাদাবাদ দরবার শরীফে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) অনুষ্ঠিত গ্রীন চট্টগ্রাম এ্যালায়েন্সের উদ্যোগে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে বক্তারা চট্টগ্রামকে সবুজে সাজাতে ও পরিবেশ সুরক্ষায় গ্রীন চট্টগ্রাম এ্যালায়েন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ষাটের দশকের ফুটবলার অমলেন্দু বিকাশ বড়ুয়া’র অনিত্য সভা অনুষ্ঠিত

২৩ বছর ধরে কারাগারে ফিলিস্তিনের ‘নেলসন মেন্ডেলা’

  • প্রকাশকাল: শনিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৫

ফিলিস্তিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সিনিয়র নেতা মারওয়ান বারগুতি। ফিলিস্তিনিদের কাছে ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ নামেই বেশি পরিচিত। ২০০২ সালের এপ্রিল মাসে ইসরাইলি সেনাদের হাতে ধরা পড়েন এই নেতা। সেই থেকে আজ পর্যন্ত টানা ২৩ বছর তিনি কারাগারের লোহার শেকলেই বাঁধা। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দিনের আলো দেখেননি মুক্তভাবে, পরিবারের স্পর্শ থেকেও বহু দূরে। হয়েছেন চরম নির্যাতনের শিকার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এত বছরের বন্দিত্ব বারগুতিকে ভাঙতে পারেনি। বরং আরও দৃঢ় ও অটল করে তুলেছে। অন্ধকার সেলে বসেই গোপনে লিখেছেন বই, ডাক দিয়েছেন হাজারও বন্দির অনশন ধর্মঘটের, আর কোটি ফিলিস্তিনির হৃদয়ে প্রজ্বলিত করেছেন প্রতিরোধের অমর প্রদীপ। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক নেলসন ম্যান্ডেলার মতোই বারগুতিও হয়ে উঠেছেন স্বাধীনতার জীবন্ত প্রতীক।

বহু বছর পর শুক্রবার প্রথমবারের মতো বারগুতির একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দেখা গেছে, ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির তার সেলে ঢুকে তাকে হুমকি দিচ্ছেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, ফ্যাকাশে ও দুর্বল শরীরে সাদা টি-শার্ট পরে বসে আছেন বারগুতি। প্রহরী ও ক্যামেরায় ঘেরা অবস্থায় মন্ত্রী বেন-গভির তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোমরা আমাদের পরাজিত করতে পারবে না। যে-ই ইসরাইলের জনগণকে নিশানা করবে এবং আমাদের সন্তান ও নারীদের হত্যা করবে, তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।’

শৈশব ও রাজনৈতিক যাত্রা

১৯৫৯ সালের ৬ জুন রামাল্লার কোবার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বারগুতি। সে বছরই প্রতিষ্ঠিত হয় ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদী এবং সামজিক গণতান্ত্রিক দল ফাতাহ। ১৯৭৪ সালে এ দলে যোগ দেন তিনি। এক সশস্ত্র সংগঠনের সদস্য হওয়ার দায়ে ১৯৭৮ সালে প্রথমবার কারাগারে যান। টানা চার বছর কারাভোগের সময় তিনি ইংরেজি ও হিব্রু শেখেন। পড়াশোনা অনেকটা এগিয়ে নেন সেখানেই। পরে ১৯৮৩ সালে মুক্তি পেয়ে বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শুরু করেন। এ সময় আইনজীবী ফাদওয়া ইব্রাহিমের সঙ্গে পরিচয় হয়। যাকে তিনি ১৯৮৪ সালে বিয়ে করেন। ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদায় (ফিলিস্তিনি গণআন্দোলন) নেতৃত্ব দিয়ে ফিলিস্তিনে ও ফাতাহর ভেতরে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তবে সে বছরই তাকে জর্ডানে নির্বাসিত করা হয়। সাত বছর পর, ১৯৯৪ সালে অসলো চুক্তির মাধ্যমে তিনি ফিরে আসেন। ১৯৯৬ সালে ফিলিস্তিনি আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

দ্বিতীয় ইন্তিফাদা ও গ্রেফতার

২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হলে, ফাতাহর সশস্ত্র শাখা তানজিমের নেতা হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বারগুতি। তখন থেকে ইসরাইলের কাছে ‘ওয়ান্টেড’ হয়ে ওঠেন তিনি। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্প ডেভিডে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি সম্মেলন ভেঙে যাওয়ার পর শুরু হয় এই আন্দোলন। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে তিনি দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে একটি মতামত নিবন্ধ লিখে ফিলিস্তিনি রাজনীতিতে তার শক্ত অবস্থান জানান দেন। এর মাত্র তিন মাস পরেই তাকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৪ সালের মে মাসে তাকে পাঁচটি হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং পাঁচটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বারগুতি।

কারাগারে নির্মমতার শিকার

ইসরাইলের কারাগারে বন্দি বারগুতিকে নির্মমভাবে আঘাত করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনি বন্দি সহায়তাকারী সংস্থাগুলো। গত বছর ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি এবং কমিশন ফর ডিটেইনিস অ্যান্ড এক্স-ডিটেইনিস অ্যাফেয়ার্স এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরাইলের মেগিদ্দো কারাগারে বন্দি থাকাকালীন বারগুতিকে লাঞ্চিত করা হয়। তার ওপর হামলাও করা হয়। এতে তার দেহে গুরুত্বর চোট লাগে। বারগুতির মাথা, কান, পাঁজর, ডান হাতে ও পিঠে আঘাত লেগেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

ফিলিস্তিনের ম্যান্ডেলা

ইতিহাস ও জীবনী পড়তে ভালোবাসেন বারগুতি। কারাগারে থেকেও তিনি বই পড়েন। যার মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনি স্যাম্পসনের লেখা নেলসন ম্যান্ডেলার জীবনী। কারাগারে থাকাকালীন ২৫৫ পৃষ্ঠার একটি বই লিখেছিলেন তিনি। যা গোপনে তার আইনজীবী ও পরিবারের মাধ্যমে বাইরে পাঠানো হয়। বইটিতে তিনি কারাগারের অভিজ্ঞতা বিস্তারিত তুলে ধরেন। তীব্র নির্যাতনের শিকার হয়েও ভেঙে পড়েননি বারগুতি। নেলসন ম্যান্ডেলা যেমন ২৭ বছর কারাবাসে থেকেও তার নেতৃত্বে অটল ছিলেন ঠিক তেমনিভাবে অটল আছেন বারগুতিও।

রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

বর্তমান ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের উত্তরসূরি হিসাবে বারগুতিকে অনেকেই সম্ভাব্য নেতা মনে করেন। ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনি সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চের এক জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনে দাঁড়ালে বারগুতি আব্বাসকে সহজেই পরাজিত করতে পারেন। জরিপে প্রায় অর্ধেক মানুষ বারগুতিকে ভোট দিতে আগ্রহী বলে জানায়। আজও বারগুতি কারাগারে বন্দি। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা তাকে করে তুলেছে ফিলিস্তিনি সংগ্রামের জীবন্ত কিংবদন্তি।

কিছু বিশ্লেষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতারা মনে করেন, বারগুতির মুক্তি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আশা এবং গাজা ও পশ্চিম তীরের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত সমাধানের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। মার্কিন সংগীতশিল্পী সোফিয়া স্কট বলেছেন, ‘আমি মনে করি, বারগুতি কোনো হুমকি নন বরং তিনি ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সংযোগ স্থাপন করতে পারেন।’

ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটির প্রধান রায়েদ এমার নিউজউইককে বলেছেন, ‘বারগুতি ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে শান্তি ও স্বাধীনতার চেতনাকে জীবন্ত রাখেন। তার মুক্তি ফিলিস্তিনের রাজপথে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।’

ইসরাইলের সংবাদপত্র হারেৎজের সাংবাদিক গিদেওন লেভি বলেছেন, ‘বারগুতি হত্যা করার জন্য জন্ম নেননি। তিনি হিংস্র নন। কিন্তু ইসরাইল তাকে এবং পুরো ফিলিস্তিনি জনগণকে চাপ প্রয়োগ করছে।’

২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ ও ১৯৮৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী দেশমন্ড টুটু বারগুতিকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এধরণের অন্যান্য নিউজ