মোয়াজ্জেম হোসেন, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
পায়রা বন্দর এর উন্নয়ন, অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বুধবার(২৫ জুন) সকাল ১০ টায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও অংশীজনদের মধ্যে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল।
সভায় বন্দরের কর্মকর্তাগণসহ বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থার প্রতিনিধিগণ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারী-অংশীজন এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী। ‘পায়রা বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ভবিষৎ পরিকল্পনা’ নিয়ে বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সুমন হাওলাদার, পরিচালক, (মোংলা, পায়রা, পানগাঁও এবং ল্যান্ড পোর্ট), মোঃ মিজানুর রহমান, সভাপতি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট, মামুনুর রশিদ, পরিচালক, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ও মোঃ হুমায়ুন কবির, আহবায়ক, কলাপাড়া প্রেস ক্লাব।
স্বাগত বক্তব্যে পায়রা বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এতদঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবন-মানে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে।এছাড়া এ বিষয়ক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
সুমন হাওলাদার বলেন, পায়রা বন্দর হবে আমদানি-রপ্তানির নতুন হাব। মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, পায়রা বন্দর দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একটি আঞ্চলিক সহায়ক কেন্দ্রে পরিনত করা জন্য বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। মামুনুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের তথা সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পায়রা বন্দর যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে। মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, পায়রা পোর্ট দেশের জন্য একটি সক্রিয় অর্থনৈতিক করিডোরে পরিনত হতে যাচ্ছে। এছাড়া বন্দরের অবশিষ্ট কাজ শেষ করে বন্দরকে পূর্ণাঙ্গরূপে সচল করতে সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সমাপনী বক্তব্যে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল বলেন, পায়রা বন্দরের প্র জেটি ও জাহাজ হ্যান্ডলিং-এর প্রারম্ভিক সুযোগ সুবিধাদি নির্মাণের প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। টার্মিনাল সংযোগ সড়ক সেতু নির্মাণশেষে আগামী জুলাই ২০২৬ নাগাদ পায়রা বন্দরে প্রথম টার্মিনাল পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করার বিষয়ে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।তিনি জানান, পায়রা বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালের অপারেশন শুরুতে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে পায়রা বন্দর ৫২৯ টি বৈদেশিক জাহাজ ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ নিরাপদে হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ থেকে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ খুব দ্রুতই শুরু হবে এবং তিনি আরও বলেন, পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এখানে শিল্প ক্ষেত্রে বড় বিনিযোগ হয়েছে এবং আরো বহু বিনিয়োগ অপেক্ষমান আছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বন্দর সীমায় অবস্থিত দুটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বন্দরের উপর নির্ভরশীল অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালী ইপিজেড, বন্দরের নিজস্ব শিল্পাঞ্চলের কথা তুলে ধরেন। এখানে বিনিয়োগের জন্য একাধিক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তিনি জানান, বন্দর পর্ণাঙ্গভাবে সচল হওয়ার পর বন্দর ও বন্দর-নির্ভর যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে সেটা দক্ষিণাঞ্চলের একটি তুলনামূলক অনগ্রসর জনপদকে সমৃদ্ধ করা তথা দেশের অর্থনীতিতে অভতপূর্ব অবদান রাখবে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দরের অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তার জন্য তিনি সকলকে আহবান জানান।
Leave a Reply